তারের জট কালনার চকবাজারে। —নিজস্ব চিত্র।
সঙ্কীর্ণ পথের ধারে গা ঘেঁষে রয়েছে অজস্র টিনের ছাউনি দেওয়া দোকান। সেগুলির সামনের অংশে পলিথিনের আচ্ছাদন। ভরা বাজারে খাবারের দোকান জ্বলে গ্যাস। বাজারের পাশেই রয়েছে কেরোসিনের ডিপো। এই সব দেখে কালনা শহরের চকবাজারের বাসিন্দাদের দাবি, এলাকা যেন জতুগৃহ।
ভোরেই শুরু হয় আনাজ, মাছ, ফলের বাজার। সকাল হলে খোলে খুচরো বাজারের সব দোকান। সব মিলিয়ে দোকানের সংখ্যা ছ’শোর বেশি। বাজার এলাকায় রয়েছে ডাকঘর, ব্যাঙ্ক। প্রতিদিনই ওই তল্লাটে কয়েক হাজার মানুষ আসেন।
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ঘিঞ্জি বাজারে ঢোকার মুখের একাংশ জবরদখল হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, বিদ্যুতের তার ছড়িয়ে রয়েছে অনেক জায়গায়। পলিথিন-সহ দ্রাহ্য সামগ্রীর পসরা সাজানো অনেক দোকানে। বেশির ভাগ দোকানেই নেই আগুন নেভানোর যন্ত্র।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, আড়াই দশক আগে সেখানে একটি খড় বোঝাই গাড়ি বিদ্যুতের তারের স্পর্শে এসে আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। কাছাকাছি এক ব্যবসায়ীর গোলা থেকে বালি এনে আগুন নেভানো হয়েছিল। ফের অগ্নিকাণ্ড হলে কী হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা নেই। শহরের বাসিন্দা বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজারের যা পরিস্থিতি, তাতে আগুন ছড়ালে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন।’’
বাজারের ব্যবসায়ীদের থেকে টোল আদায় করে নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি। কমিটির একটি কার্যালয় তৈরি হচ্ছে বাজারে। কমিটির এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চকবাজারের পরিস্থিতি আমাদের ভাবাচ্ছে। দ্রুত দমকলের সঙ্গে কথা বলব।’’ বাজার কমিটির সম্পাদক চাঁদু ভারতী জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য ভিন্ রাজ্যে যাচ্ছেন। ফিরেই বিষয়টি দেখবেন। দমকলের কালনা শাখার ওসি অরিন্দম দেবনাথের বক্তব্য, চকবাজার পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।
বাজারের মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে ব্রহ্মা মন্দির। বিভিন্ন সময়ে মন্দির ঘিরে উৎসব হয়। ভিড়ে ঠাসা বাজারে আগুন ছড়ালে কি হবে? এক ব্যবসায়ী মন্দিরের দিকে তাকিয়ে কপালে আঙুল ঠেকিয়ে বলেন, ‘‘ব্রহ্মাই জানেন।’’