নগদের অভাবে ধুঁকছে গয়নার ছোট দোকান

প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের ঘোষণার পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। ডিসেম্বরে চলছে বিয়ের মরসুম। অন্যান্য বছর এই সময়ে নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না কাঁকসা ও দুর্গাপুর শহর লাগোয়া বিভিন্ন ছোট ছোট সোনা-রুপোর দোকানে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১২
Share:

দেখা নেই ক্রেতার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের ঘোষণার পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। ডিসেম্বরে চলছে বিয়ের মরসুম। অন্যান্য বছর এই সময়ে নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না কাঁকসা ও দুর্গাপুর শহর লাগোয়া বিভিন্ন ছোট ছোট সোনা-রুপোর দোকানে। কিন্তু এ বছর নগদ-টাকার জোগান কম থাকায় হাঁপরে ফুঁ দেওয়ার ছবিটা তেমন দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। কাজ না থাকায় গয়নার দোকানের বহু কর্মচারী কাজও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

Advertisement

কাঁকসার একটি গ্রামের সোনার ব্যবসায়ী জানান, গ্রামীণ এলাকায় যে কোনও রকম লেনদেনে এখনও ভরসা সেই নগদ। ‘ক্যাশলেস’ কেনাকাটা তো দূরঅস্ত। বিভিন্ন গ্রামের ক্রেতাদের কাছে এখনও ব্যাঙ্কের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডই নেই বলে দাবি তাঁর। এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ দোকানে কার্ডে বিল মেটানোর বন্দোবস্তও তৈরি হয়নি বলে জানান কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর, এগারো মাইল, বসুধা, রাজবাঁধ এলাকার গয়নার দোকানের মালিকেরা। তাঁদের দাবি, হাতে নগদ টাকা না থাকায় আর দোকানমুখো হচ্ছেন না ক্রেতারা।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, বিয়ের মরসুমে মোটামুটি ভাবে একটা মাঝারি দোকানে ১৫ থেকে ২০ ভরি গয়নার কাজ হয়। নোট-বাতিলের ঘোষণার পরে তা ৭-৮ ভরিতে ঠেকেছে। এই সময়ে এক জন গয়নার কারিগর মাসে ৮ থেকে ন’হাজার টাকা পর্যন্ত উপরি রোজগার করতে পারেন। কিন্তু এ বার সে সবের কিছুই নেই। এমনকী উপায় না দেখে অনেকে পেশাও ছাড়ছেন বলে জানা গিয়েছে। তেমনই এক জন ত্রিলোকচন্দ্রপুরের বাপি পাল বলেন, ‘‘কাজ নেই। লটারির টিকিট বিক্রি করছি।’’

Advertisement

পানাগড় বাজার স্বর্ণ শিল্পী সমিতির কোষাধ্যক্ষ প্রভাতকুমার দত্ত জানান, কাঁকসায় একশোরও বেশি ছোট সোনার দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতা কারও কাছে কার্ডে কেনাকাটার বন্দোবস্ত না থাকায় মার খাচ্ছে স্বর্ণ শিল্পই। অনেকে ক্রেতা আবার গয়না নিতে এসে সেই পুরনো নোটই বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে জানা গেল। আর যাঁদের হাতে কার্ড রয়েছে, তাঁরা বড় দোকানের দিকে ঝুঁকছেন বলে দাবি করলেন পানাগড়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী তরুণ দত্ত।

একই হাল দুর্গাপুর লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামেও। দুর্গাপুর লাগোয়া পাড়দহি গ্রামে গয়নার দোকান রয়েছে গৌতম মণ্ডলের। তিনি জানান, হরিবাজার, পরাণগঞ্জ, জেমুয়ার প্রভৃতি গ্রাম থেকে ক্রেতারা আসেন। তাঁর দাবি, ‘‘নোট-বাতিলের ঘোষমার আগেই অনেকে বরাত দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু নগদ না থাকায় ক্রেতারা গয়না নিতে পারছেন না।’’ সমস্যায় পড়েছেন ক্রেতারাও। কাঁকসার শিবপুরের বাসিন্দা গীতা মুখোপাধ্যায় জানান, কার্ডে কেনাকাট করতে পারেন না। সামনেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ে রয়েছে। ইচ্ছে থাকলেও গয়না দিতে পারছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement