জাতীয় সড়কের এই জায়গাতেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়ক যখন চার লেনের ছিল, তখনই প্রায়শই দুর্ঘটনা হত দুর্গাপুরের ওল্ড কোর্ট মোড়ে। জাতীয় সড়ক ছ’লেন হওয়ার পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। বেড়েছে দুর্ঘটনার হারও, দাবি স্থানীয়দের। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে ওই মোড়ে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, দাবি জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
চলতি বছরের প্রথম দু’মাসে ওল্ড কোর্ট মোড়ে ছোটখাটো বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে বড় দুর্ঘটনাও। ২৪ জানুয়ারি ওই মোড়ে ট্র্যাফিক সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার মিলন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে সিগন্যালের আলো নিয়ে বাসিন্দাদের জাতীয় সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছিলেন তিনি। একটি দশ চাকার ট্রাক সিগন্যাল না মেনে সটান চলে আসে তাঁর সামনে। তিনি সরে যাওয়ার আগেই ট্রাকটি তাঁকে ধাক্কা মারে। চাকা উঠে যায় তাঁর দু’পায়ের উপরে। জখম হন তিনি। এর পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি মোটরবাইকে করে রাস্তা পারাপারের সময়ে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওল্ড কোর্ট বস্তি এলাকার বাসিন্দা মাধব বাউড়ির। বাসিন্দাদের দাবি, ওই মোড়ে ফুটব্রিজ নির্মাণই দুর্ঘটনা আটকানোর একমাত্র উপায়।
দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) রাখি তিওয়ারিও বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে ওল্ড কোর্ট মোড়ে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। অবিলম্বে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ওই মোড়ে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করা দরকার।’’ বাসিন্দারা জানান, নানা প্রয়োজনে জাতীয় সড়ক পারাপার করতে হয়। দিনভর চলে এই যাতায়াত। কিন্তু যানবাহনের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে যাওয়ায় বিপদের ঝুঁকি নিয়েই চলে পারাপার, জানান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা বুধন বাউড়ির কথায়, ‘‘ফুট ওভারব্রিজ না তৈরি হলে দুর্ঘটনাও বন্ধ হবে না। মাধবের মতো আরও অনেকের প্রাণহানি হতে পারে।’’ নঈমনগরের বাসিন্দা মহম্মদ আনসারিও বলেন, ‘‘আমাকে মাঝেসাঝে ওই মোড় দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। খুব সন্তর্পণে রাস্তা পারাপার করি।’’ তবে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদেরও কারও কারও অভিযোগ, রাস্তা পারাপারের সময় কেউ কেউ নিয়ম না মেনে বিপদ ডেকে আনেন। এর জন্য পথ নিরাপত্তায় নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়।
যদিও ওই এলাকায় ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের তৈরির আশু কোনও সম্ভাবনার কথা শোনা যায়নি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে। জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় আসানসোল থেকে বাঁশকোপা পর্যন্ত মোট পাঁচটি ফুট ওভারব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেগুলির কাজ এখনও শেষ হয়নি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, বাসিন্দাদের দাবির কথা সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।