রাস্তা অবরোধে টেটিখোলার বাসিন্দাদের একাংশ। নিজস্ব চিত্র
এলাকাবাসীর দাবি তাঁরা সিপিএম সমর্থক। সে জন্য তৃণমূল পরিচালিত জেমুয়া পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নের কাজ করে না। এই অভিযোগে মঙ্গলবার রাস্তা অবরোধ করলেন টেটিখোলার বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শোভন দত্তের বাড়ি সামনেও বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ উড়িয়ে শোভন বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টেটিখোলার ১২ নম্বর স্ট্রিট সংস্কারের অভাবে বহু বছর ধরে বেহাল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অন্য রাস্তায় কংক্রিটের ঢালাই পড়লেও এখানে তা হয়নি। শোভনকে বিষয়টি বলেও লাভ হয়নি। বিক্ষোভকারীদের তরফে মৌ মণ্ডল সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ করেন, “রাস্তাটি সংস্কার করতেই হবে। অথচ, সে কথা বললেই শুনতে হয়, আমরা সিপিএম করি। তাই রাস্তা হবে না।” কাছেই থাকা অন্য এক মহিলা বলেন, “রাস্তাটির কথা উঠলেই বলা হয়, ‘ওখানে সিপিএমের লোকজন থাকে। রাস্তা পাকা করার দরকার নেই।’ পঞ্চায়েত থেকে শাড়ি দেওয়ার সময়েও আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।” যদিও, পঞ্চায়েত সদস্য শোভনের প্রতিক্রিয়া, “ওঁরা কেন এমন বলছেন, জানি না। সাধ্য মতো উন্নয়নের কাজ করেছি। ওই এলাকায় নিকাশি নালা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই রাস্তার কাজও হবে।”
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি আবাস যোজনায় অনিয়মের অভিযোগে জেমুয়া পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। এ দিনের ঘটনা নিয়েও ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘সিপিএম-কে সমর্থন করেন বলে বঞ্চিত করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পঞ্চায়েত কি কোনও রাজনৈতিক দলের হতে পারে?” বিজেপির অন্যতম জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত বলেন, “শাসক দলের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছেন বলে যদি টেটিখোলা এলাকার বাসিন্দারা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হন তা হলে আমরা তাঁদের পাশে আছি।” তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য সরকার রাজ্যের সবার উন্নয়নে কাজ করে। সরকারি প্রকল্পের সুফল দল-মত নির্বিশেষে সবাই পেয়ে থাকেন। পঞ্চায়েত স্তরেও কাজ হয় সে ভাবেই। তাই বিরোধীদের ভিত্তিহীন কথার কোনও গুরুত্ব নেই।”
এ দিকে, বাড়ির সামনে বিক্ষোভের ঘটনা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শোভন। তিনি বলেন, “আমি বাড়িতে ছিলাম না। তখন হুমকি দেওয়া হয়েছে। গালিগালাজ করা হয়েছে। বাড়িতে অসুস্থ বাবা ছিলেন। আমি ফেরার পরেও আমাকে হুমকি দেওয়া হয়।” এর পরে পুলিশ আসে সেখানে। বিক্ষোভকারীদের কয়েক জনকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। সঙ্গে যান সিপিএম নেতা পঙ্কজ। পরে তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্যকে কেউ হুমকি দেননি। আসলে বেআইনি উপার্জন করলে এমন ভয় হওয়া স্বাভাবিক।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শোভন।
পাশাপাশি, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক জনকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। পরে তাঁদের ছেড়েদেওয়া হয়।