জমির বদলে জমি মেলেনি, ক্ষোভ অণ্ডালে

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অণ্ডালে প্রস্তাবিত বিমাননগরীর জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে। অণ্ডাল ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ১১টি মৌজার প্রায় আড়াই হাজার একর জমি নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অণ্ডাল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৪
Share:

বিমানবন্দরের সামনে রাস্তায় বিক্ষোভ। বুধবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

একাধিক দাবি পূরণ না হওয়ার অভিযোগে বুধবার অণ্ডালে কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের মূল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন প্রকল্পের জমিদাতা, বর্গাদার, খেতমজুর ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবক-যুবতীরা। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ বিমাননগরী কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানের নিশ্চিত আশ্বাস দিচ্ছেন, ততক্ষণ কোনও যাত্রীকে ঢুকতে-বেরোতে দেওয়া হবে না। পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার পরে বিক্ষোভ থামে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অণ্ডালে প্রস্তাবিত বিমাননগরীর জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে। অণ্ডাল ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ১১টি মৌজার প্রায় আড়াই হাজার একর জমি নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জমি নেওয়ার সময়ে কর্তৃপক্ষের তরফে নগদ ক্ষতিপূরণ, প্রতি একর জমির জন্য প্রকল্প এলাকার ভিতরে এক কাঠা করে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী জমি দেওয়া, জমিদাতা পরিবারের ছেলেমেয়েদের আইটিআই-এ প্রশিক্ষণ শেষে কাজের ব্যবস্থা এবং ভাগচাষি, বর্গাদার ও খেতমজুরদের আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু নগদ ক্ষতিপূরণ ছাড়া আর কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিতে মাঝে মাঝেই প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার ফের তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় বসে পড়েন অনেকে। ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বিমাননগরীতে ঢোকার মূল গেটের রাস্তা এর জেরে বন্ধ হয়ে যায়। আরতি গ্রামের বাসিন্দা আয়রুল বিবির অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলেমেয়ে নেই। জমিটুকুই সম্বল ছিল। টাকা পাইনি। কাজ দেবে বলেছিল, তা-ও পাইনি। সংসার চলছে না।’’ অণ্ডালের বাসিন্দা জীবনকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের পরিবারের জমি ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই। বাজারদরের থেকে অনেক কম টাকায় জমি কিনতে চাওয়ায় আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। তবু অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বাজারদরে জমির দাম চাই।’’

Advertisement

এ দিন বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় ‘অণ্ডাল কৃষিজমি স্বার্থ রক্ষা কমিটি’। ওই কমিটির তরফে দেবাশিস ঘোষালের বক্তব্য, ‘‘জমির জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা মিলেছে। কিন্তু জমির বদলে জমি পাইনি। জমিদাতাদের পরিবারগুলি থেকে এক জন করে আইটিআই-এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাঁরা কেউ কাজ পাননি।’’

এ দিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অণ্ডালের বিডিও ঋত্বিক হাজরা ও পুলিশের বড় বাহিনী। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যা মেটাতে বিমাননগরী কর্তৃপক্ষকে দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সাব-কমিটি গড়া হয়েছে। বিডিও জানান, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই জমির বদলে জমি বিলির প্রক্রিয়া শুরু করবে। অন্য দাবিগুলি নিয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement