শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
মেয়ের জন্ম দেওয়ার পরে বধূকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাপের বাড়িতে। মাস কয়েক আগে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার রাতে ওই বধূকে কাটোয়া হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁদের বিরুদ্ধে। আদর পণ্ডিত (১৯) নামে ওই বধূর মৃত্যুর পরে খুনের অভিযোগ তুলেছেন বাপের বাড়ির লোকজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর তিনেক আগে টিকরখাঁজির বাসিন্দা আদরের সঙ্গে বিয়ে হয় বরমপুরের মঙ্গল পণ্ডিতের। হায়দরাবাদে একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করে মঙ্গল। তাঁদের বছর দেড়েকের একটি মেয়ে রয়েছে। মৃতার মাসি আশালতা পণ্ডিত অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ পড়শিদের কাছে মেয়ের মৃত্যুর খবর পান তাঁরা। তখনই বরমপুর ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, আদর বাড়িতে নেই। বারান্দায় বসে ফুঁপিয়ে কাঁদছে একরত্তি শিশুটি। আর কেউ নেই। পড়শিদের পরামর্শে কাটোয়া হাসপাতালে গিয়ে মৃতার পরিজনেরা জানতে পারেন, আদরকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আদরকে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে দিচ্ছিল না মঙ্গল। শিশুকন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন আদর। মাস কয়েক আগে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরত দিয়ে যান পরিজনেরা। দোলের জন্য আদর ও তার মেয়ের টিকরখাঁজি আসার কথা ছিল। তার আগেই মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ আশালতাদেবীর।
বুধবার হাসপাতালে আসেন মঙ্গলের এক আত্মীয়া। তাঁকে দেখে রাগে ফেটে পড়ে মৃতার পরিবার। তাঁর সঙ্গে এক দফা ধস্তাধস্তিও হয়। ওই আত্মীয়ার অভিযোগ, ‘‘আমাকে মারধর করা হয়েছে।’’ যদিও মারধরের কথা মানতে চাননি মৃতার পরিজনেরা। এ দিন কাটোয়া হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়। মঙ্গল পলাতক। তবে তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তা পাওয়ার পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।