চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ। সগড়ভাঙায়। নিজস্ব চিত্র।
চাকরি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রোজগার বন্ধ। তাঁদের জায়গায় পরিবারের অন্য কাউকে চাকরি দিতে হবে, এই দাবিতে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার একটি বেসরকারি গ্রাফাইট কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান ‘কাজ হারানো’ শ্রমিকেরা। কারখানার আইএনটিটিইউসি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ রমজান বলেন, “সংগঠনের জেলা সভাপতি থেকে জেলার দুই মন্ত্রীকে বার বার বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিছু হয়নি।” তাঁর এই বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ পা খুইয়েছেন। কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত বা অন্য কারণে অসুস্থ হয়ে কারখানার কাজ হারিয়েছেন। তাঁদের ‘আনফিট’ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই পরিবারের কাউকে চাকরির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছেন। অভিযোগ, আবেদনে সাড়া না মেলায় এ দিন তাঁরা কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের কেউ এসেছিলেন অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিয়ে, কেউ ক্রাচে ভর দিয়ে। এসেছিলেন ক্যানসার আক্রান্ত এক ব্যক্তিও। তাঁরা জানান, কেউ ২০ বছর, কেউ ৩০ বছর ধরে এই কারখানায় চাকরি করেছেন। এখন কাজ হারিয়ে রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবারের এক জনকে চাকরি দিতে হবে।
শেখ রমজানের দাবি, “কারখানা কর্তৃপক্ষকে বছরের পর বছর বলা হচ্ছে। আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক ও দুই মন্ত্রীকে বলেছি। বলা হয়েছিল, নির্বাচন মিটলে বিষয়টি দেখা হবে। তার পরেও কিছু হয়নি।” তিনি জানান, এই সমস্যা যতদিন না মিটবে আন্দোলন হবে।
আইএনটিটিইউসির একটি সূত্রের দাবি, প্রশাসনের তরফে ২৭ জনের একটি তালিকা পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে কিছু দিন ধরে। এই সুযোগে কেউ কেউ তেমন অসুস্থ না হয়েও পরিবারের অন্য কারওর চাকরি দাবি করছেন। সেটা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে গিয়ে এবং মাঝে নির্বাচন চলে আসায় বিষয়টি পিছিয়ে যায়। সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ বলেন, “যাঁরা প্রকৃতই অসুস্থ তাঁদের পরিবারের এক জনের চাকরির বিষয়ে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।”
বুধবার এই কারখানার গেট বন্ধ করে আন্দোলন করানোর আইএনটিটিইউসি ও তৃণমূলের তরফে রমজানের সমালোচনা করা হয়। বৃহস্পতিবার সরাসরি রমজাম দলীয় নেতৃত্বকে আক্রমণ করায় কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই কারখানায় এলাকাবাসীকে বঞ্চিত করে স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব অর্থের বিনিময়ে বহু বহিরাগতকে কাজ দিয়েছেন।” অভিজিৎ বলেন, “বিরোধীরা কী বলছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে ওই নেতার বিষয়ে ইতিমধ্যেই উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।”