—নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের এক মাসের মধ্যেই ‘আত্মঘাতী’ হল কাটোয়ার এক দম্পতির। পরিবারের দাবি, শনিবার শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নববধূ। স্ত্রী-র মৃত্যুর খবর শুনে একই পথ বেছে নেন স্বামী। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার শ্রীখণ্ড গ্রামের খাড়াপুকুর পাড়ের বাসিন্দা রাজেশ রায় (২৪) এবং সোনালি মাজি (১৭) আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানিয়েছে পরিবার। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সোনালিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্ত্রী-র মৃত্যুর পর একই ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন রাজেশও।
পরিবার জানিয়েছে, রাজেশের মা মারা গিয়েছেন। বাবা ও এক ভাইয়ের সঙ্গে স্ত্রী-কে নিয়ে থাকতেন তিনি। বছর চারেক আগে পাড়ার একটি মেয়ের সঙ্গে প্রথম বার বিয়ে হয়েছিল রাজেশের। তবে পারিবারিক অশান্তির জেরে বছর দুয়েক আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাঁর। এর পর মঙ্গলকোটের পিণ্ডিরা গ্রামে বাসিন্দা সোনালির সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সোনালির কাকা তারক মাজি বলেন, “ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপের পর রাজেশ এবং সোনালির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রাজেশ বিয়ের প্রস্তাব দিলেও আমরা সোনালির ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সপ্তাহ তিনেক আগে লুকিয়ে রাজেশের কাছে চলে গিয়ে ওকে বিয়ে করে সোনালি। তা নিয়ে কোনও ঝামেলা হয়নি।”
রাজেশ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ করতেন। তাঁর ভাই মঙ্গল রায়ের দাবি, “শনিবার রাতে দাদা একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে কাজে গিয়েছিল। বাবা গোয়ালে গরুকে খাবার দিচ্ছিলেন। সে সময় বৌদি নিজের ঘরে গলায় দড়ি দেয়। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে বৌদির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়।” তিনি জানিয়েছেন, রাতেই সোনালিকে শ্রীখণ্ড স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে রাজেশও সেখানে পৌঁছন। মঙ্গলের কথায়, “বৌদির মৃত্যুর খবর শুনে দাদা কাটোয়া নিয়ে যাওয়ার গাড়ি আনতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়।”
পরিবারের দাবি, শনিবার গভীর রাতেই নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন রাজেশ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ নিয়ে যায়। রাজেশের বাবা মধু রায়ের দাবি, “বাড়িতে কোনও অশান্তি হয়নি। বৌমা কেন এ কাজ করল, বুঝতে পারছি না। বৌমার মৃত্যুর শোক সামলাতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে আমার ছেলে।”
রাজেশ বা সোনালি— দুই পরিবারই থানায় অভিযোগ করেনি জানিয়েছে পুলিশ।