এমনই হাল ভবনটির। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়কের পাশে বড়সড় ভবন। রয়েছে ৪২টি দোকানঘর, সভাঘর। অণ্ডালের ভাদুরা গ্রামে ঢোকার মুখে বছর দুয়েক আগে তৈরি হয়েছিল এই ‘কর্মতীর্থ ভবন’। আবেদনকারীরা দোকান না খোলায় কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ভবনটি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, দোতলা ভবনটি প্রহরীবিহীন অবস্থায় রয়েছে। বাইরের একটি গেট সব সময় খোলা থাকে। ভিতরে কয়েকটি জানলার কাচ ভাঙা, বেশ কিছু পরিকাঠামোও বেহাল হয়ে পড়েছে অবহেলায়। ভিতরে-বাইরে ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থা (এমএসএমই) পূর্ত দফতরের মাধ্যমে এই ভবনটি নির্মাণ করেছিল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির তরফে বিজ্ঞাপন দিয়ে দোকানগুলি নিতে ইচ্ছুকদের আবেদন জানাতে বলা হয়। ব্লক প্রশাসন জানায়, ২২ জন আবেদন করেছেলেন। তাঁদের নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী ‘অণ্ডাল ব্লক কর্মতীর্থ পরিষেবা সমবায় সমিতি’ গঠন করা হয়। এমএসএমই বিভাগ ওই সমবায়কে ভবন হস্তান্তর করে। আবেদনকারীরা বিউটি পার্লার, বই বাঁধানো, দর্জি, ব্যাগ তৈরির মতো নানা ব্যবসা করার কথা জানিয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার পরে আর কেউ দোকান খুলতে আসেননি বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দোকানঘর নেওয়া এক জনের অভিযোগ, ‘‘অণ্ডাল মোড় থেকে প্রায় পাচশো মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় ভবনটি তৈরি করা হয়েছে। দোকান হাতে তুলে দেওয়া হলেও বিদ্যুতের ব্যবস্থা ছিল না। প্রহরী নেই। তার জেরে আমরা কেউ ওখানে যেতে চাইনি।’’ সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুফান মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পকে স্বপ্নের প্রকল্প বলেন। বেকারদের স্বয়ম্ভর করতে বিনা পয়সায় দোকানঘর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতায় প্রকল্প অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।’’
বিডিও ঋত্বিক হাজরা অবশ্য দাবি করেন, মাস ছয়েক আগে ভবনে বিদ্যুদয়ন হয়েছে। একাধিক বার উপভোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘৪ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করেছি। পনেরো দিনের মধ্যে দোকান না খুললে চাবি ফেরত নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন আটকে রাখার জন্য ‘পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি অ্যাক্ট’ অনুযায়ী জরিমানাও করা হবে। তার পরে আবার বিজ্ঞাপন দিয়ে দোকান চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’’