Kalna

বিনোদনের অভাবে দ্রুতই ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকেরা

স্থানীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে-সহ বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার কালনার পর্যটন নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৬
Share:

কালনা রাজবাড়ি চত্বরে পর্যটকের আনাগোনা। —নিজস্ব চিত্র।

বাতাসে হালকা হিমেল আমেজ মিলতে শুরু করেছে। চলছে উৎসবের মরসুমও। ফলে, ইতিমধ্যেই কালনা শহরের প্রাচীন নিদর্শনগুলিতে ভিড় করতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। যদিও এঁদের অনেকেই রাত কাটানোর বদলে সকালে এসে বিকেলের আগেই ফিরে যাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, পিকনিক করতে ভাল হলেও গোটা দিন কাটানোর মতো বিনোদনের ব্যবস্থা নেই শহরটিতে। তা ছাড়া দর্শনীয় স্থান লাগোয়া থাকার ভাল জায়গারও অভাব রয়েছে। যদিও কালনা পুরসভার তরফে দাবি, পর্যটকদের কাছে শহরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে।

Advertisement

প্রাচীন এই শহরটিতে রয়েছে একাধিক দর্শনীয় মন্দির। এর মধ্যে টেরাকোটার কারুকার্য খচিত ১০৮টি শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, গোপাল মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরগুলি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে সাধক কবি ভবা পাগলা প্রতিষ্ঠিত ভবানী মন্দির, মহাপ্রভুর বাড়ি, দাঁতনকাঠিতলার মসজিদ-ই-মজলিসের মতো বেশ কিছু নিদর্শন। যদিও পর্যটকদের একাংশের দাবি, এই নিদর্শনগুলি ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে দেখা শেষ হয়ে যায়। তারপর আর কিছু করার না থাকায় অনেকেই শহর ছেড়ে বাড়ির পথ ধরেন।

কলকাতা থেকে কালনায় বেড়াতে এসেছিলেন বিনোদ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘বেড়াতে গেলে দর্শনীয় স্থান লাগোয়া হোটেল খুঁজি। এখানে তেমন হোটেল পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া সারাদিন কাটানোর মতোও এখানে তেমন কিছু নেই। শিশুদের জন্যও কোনও বিনোদনের ব্যবস্থা নেই।’’ আর এক পর্যটক বলেন, ‘‘সাধারণত দর্শনীয় স্থানগুলিতে এলাকার তৈরি নানা জিনিসপত্র বিক্রির স্টল থাকে। স্মৃতি বা উপহার হিসেবে তা কিনতে ভাল লাগে। কালনায় এসে সেরকম কিছু পেলাম না।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে-সহ বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার কালনার পর্যটন নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা, পরিকল্পনা হলেও তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বছর দেড়েক আগে ঠিক হয়েছিল প্রাচীন দ্রষ্টব্য স্থানগুলির আশপাশে বেশ কিছু বাড়িতে হোম স্টের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তবে সে পরিকল্পনা তেমন দাঁড়ায়নি। রাজবাড়ি মাঠ সংলগ্ন এলাকায় হোটেল গড়ার পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টে বছর চারেক ধরে বন্ধ রয়েছে পর্যটন উৎসব।

শহরের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, পর্যটকেরা যত বেশি সময় কাটাবেন তত এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি তাঁতের শাড়ি, মাখা সন্দেশ, টেরাকোটার কারুকার্যে ভরা নানা জিনিস পর্যটকদের কাছে তুলে ধরলে ব্যবসা বাড়বে। তবে এ বিষয়ে প্রসাশনের তরফে উদ্যোগের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। ফলে, পর্যটকেরা শহরে এলেও এলাকার অর্থনীতিতে তেমন কোনও প্রভাব পড়ে না।

এ বিষয়ে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েল বলেন, ‘‘কালনার পর্যটনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ মন্দির, মসজিদ এলাকায় লাইট এবং সাউন্ডের ব্যবস্থা, ছাড়ি গঙ্গায় আসা পাখিদের নিয়ে পখিরালয় গড়া, ভাগীরথীর চড়ে পর্যটকদের বেড়ানোর জায়গা তৈরি, কটেজ তৈরি-সহ বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের বিষয়ে একটি পরিকল্পনা ইতিমধ্যে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement