লালস্বর্ণের বিকল্প বাছতে শুরু পরীক্ষা

খামারে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় দু’বিঘা জমিকে অজস্র ছোট ছোট প্লটে ভাগ করে নানা ধরনের ধান বীজের চাষ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলার বেশির ভাগ চাষি দীর্ঘ দিন ধরেই লালস্বর্ণ প্রজাতির ধান চাষ করায় রোগপোকার হামলা বাড়ছে। কমছে ফলন। পাশাপাশি, সময়ে শুরু করা যাচ্ছে না রবি মরসুমে আলু, সর্ষে-সহ নানা ফসলের চাষ। ফলে সেই সব ফসলে রোগ-পোকার হামলা বাড়ে। বাড়ে চাষের খরচ। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে ধানের ২১টি প্রজাতি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করার কথা জানিয়েছে কালনা মহকুমা কৃষি খামার।

Advertisement

খামারে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় দু’বিঘা জমিকে অজস্র ছোট ছোট প্লটে ভাগ করে নানা ধরনের ধান বীজের চাষ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা।

কিন্তু কেন এমন তোড়জোড়?

Advertisement

খামারের ব্যাখ্যা, পুষ্টিগুণ বজায় রেখে ফলন কেমন হয় তা দেখতেই এই উদ্যোগ। চলতি ধান থেকে হওয়া চালের উপরের অংশ বাদ দেওয়ায় এর পুষ্টিগুণ কমে যায় বলে কৃষি দফতর জানায়। ‘পুষ্পা’, ‘কৌশল্যা’, ‘বিপিটি ৫,২০৪’-সহ মোট সাতটি প্রজাতির ভাল পুষ্টিগুণ মেলে। সেগুলির পরীক্ষামূলক চাষ হচ্ছে। কৃষিকর্তারা জানান, ‘পুষ্পা’ ও ‘কৌশল্যা’ প্রজাতির ধানে ৯৬ শতাংশ আয়রন ও ‘বিপিটি ৫,২০৪’ প্রজাতির ধানে ১৯ শতাংশ জিঙ্ক রয়েছে। ‘পুষ্পা’, ‘কৌশল্যা’, ‘বিপিটি ৫,২০৪’, এই তিনটি প্রজাতির ধান লাল স্বর্ণ প্রজাতির মতোই উচ্চ ফলনশীল। হেক্টর প্রতি জমিতে ফলন মেলে প্রায় সাড়ে পাঁচ টন।

কৃষি বিশেষজ্ঞেরা জানান, লাল স্বর্ণ চাষ করতে সময় লাগে ১৩৫-১৪০ দিন। অথচ, ‘মুক্তশ্রী’, ‘সুকুমার’, ‘মনীষা’, ‘ভূপেশ’, ‘অজিত’, ‘পুরুলিয়া ১’-এর মতো আরও কয়েকটি প্রজাতির ধান ঘরে তোলা যায় অন্তত ২০ দিন আগে। ফলে এই ধরনের স্বল্পমেয়াদি ধানের চাষ হলে সময়ে রবি মরসুমের চাষ শুরু করতে পারবেন চাষিরা।

ইতিমধ্যে, পূর্ব ভারতের ‘সবুজ বিপ্লব আনয়ন প্রকল্পে’ ‘অজিত’ ও মন্তেশ্বরে ‘মুক্তশ্রী’ প্রজাতির ধানের চাষ করেছেন বেশ কিছু চাষি, জানায় কৃষি দফতর। এই সব স্বল্পমেয়াদি ধানের প্রজাতি নিয়েও শুরু হয়েছে নানা পরীক্ষা। কালনার কৃষি খামারে ‘রানিধান’ নামে আরও একটি প্রজাতি নিয়েও চলছে গবেষণার কাজ।

কৃষিকর্তারা জানান, লালস্বর্ণ ধানের প্রতি চাষিদের দীর্ঘ দিনের দুর্বলতা রয়েছে। ‘রানিধান’ প্রজাতির ধান দেখতে লালস্বর্ণের মতো। তবে এই প্রজাতির ধান খোলাপচা সহনশীল। ফলনও মেলে ভাল। কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় একশো বিঘা জমিতে এই ধানের চাষ করেছেন চাষিরা।

কালনার সহ-কৃষি আধিকারিক (কৃষি গবেষণা) সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে একই প্রজাতির ধান চাষ করলে নানা সমস্যা দেখা দেয়। লালস্বর্ণ প্রজাতির ক্ষেত্রেও এই সমস্যায় হচ্ছে। চাষিদের বিকল্প হিসেবে নানা ধরনের ধানের প্রজাতি দেওয়ার জন্য কৃষি খামারে চালানো হচ্ছে বিভিন্ন জাত নিয়ে পরীক্ষা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement