শহরের রাস্তায় ফ্লেক্স-তোরণে পুরপ্রধান ও বিধায়কের ‘উৎসব-টক্কর’টা শুরু হয়েছিল আগেই। তার পরে শনিবার ‘চাঁদা তুলে উৎসব করা’-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কটাক্ষ করেন কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ। পুরপ্রধানের মুখে এমন কথা শুনে শহরবাসীর একাংশের ধারণা, দেবপ্রসাদবাবু আসলে নাম না করে বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর উদ্যোগে আয়োজিত ‘পর্যটন উৎসবে’র বিভিন্ন দিক নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন।
শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে দেবপ্রসাদবাবু জানান, আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামের মাঠে শুরু হচ্ছে ‘খাদ্য ও পিঠেপুলি উৎসব।’ ওই উৎসব কমিটির সভাপতি দেবপ্রসাদবাবু জানান, এ বারের উদ্বোধনে প্রধান আকর্ষণ থাকছে ড্রোন থেকে পুষ্প-বৃষ্টি ও লেসার-প্রদর্শনী। থাকছে ঊষা উত্থুপ, নচিকেতা, শিলাজিতের গান। সঙ্গে থাকবে পিঠেপুলির দেদার আয়োজন। মঞ্চস্থ হবে যাত্রা, থিয়েটার। তাঁর দাবি, উৎসবের খরচ জোগাবেন উৎসব কমিটির সদস্যরাই। এর পরেই সুর চড়াতে দেখা যায় দেবপ্রসাদবাবুকে। কারও নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাঁদা তুলে, স্কুলের পাঁচিল ভেঙে উৎসব করি না। যেখানে উৎসব করি, সেই মাঠ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিই।’’
পুরপ্রধানের এই বক্তব্যের পরেই শহরবাসী মনে করছেন, নাম না করলেও দেবপ্রসাদবাবুর লক্ষ্য আসলে বিধায়ক আয়োজিত ‘পর্যটন উৎসব’। আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে এ বারই প্রথম তিন টাকার টিকিট রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তা ছাড়া উৎসবটি যে মাঠে আয়োজিত হবে, তা আসলে একটি স্থানীয় স্কুলের বলে দাবি।
প্রসঙ্গত, পুরপ্রধান ও বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু দলের অন্দরে বিবাদমান গোষ্ঠী বলেই পরিচিত। মিছিল হোক বা বিজয়া সম্মিলনী— দু’জনকে এক মঞ্চে দেখা যায় না বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের একাংশের। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, পুরপ্রধানের এই বক্তব্য এ বার সেই ‘টক্করে’ই নতুন মাত্রা যোগ করল।
যদিও বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, ‘‘কে কী বলছেন জানি না। উৎসবের বিপুল খরচের একাংশ তুলতেই চাঁদা তোলা হয়েছে। তা ছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এবং তাঁদের অগ্রীম টাকা দিয়ে একটি ভগ্নপ্রায় পাঁচিল ভাঙা হয়েছে। উৎসব শেষে পাঁচিলটি নতুন করে তৈরি করে দেওয়া হবে।’’