কাটিগঙ্গা শিবসঙ্ঘের পুজো কালনায়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
প্রতিমা, মণ্ডপ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। সন্ধ্যা নামতেই আলোয় ভাসছে শহর। আজ, মঙ্গলবার থেকেই সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন হয়ে যাবে কালনায়। প্রতিবারই কালনার শহর-গ্রামে সরস্বতী পুজোয় মানুষের ঢল নামে। তেহাট্টা, উপলতি, ধাত্রীগ্রামের মতো এলাকায় রাত পর্যন্ত ঠাকুর দেখার লাইন পড়ে। থিম, মণ্ডপসজ্জায় একে অপরকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত হয় ক্লাবগুলিও।
এ বছর স্পুটনিক ৭০ ক্লাবের ২১ ফুট প্রতিমার শরীর জুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ১০৮ শিবমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, গোপাল বাড়ি, ভবাপাগলা মন্দিরের ছবি। বনকাপাশির শোলা শিল্পের ধাঁচে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমাটি। আড়াই মাসের চেষ্টায় প্রতিমাটি গড়েছেন শিল্পী অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, শোলা, রঙিন কাগজ, চামর, হরিতকী, তিরকাঠি, চেলিকাপ, তামা, পিতলের মতো সামগ্রী দিয়ে গড়া হয়েছে প্রতিমাটি। শিল্পীর দাবি, ‘‘১৩৫টি মন্দির ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমার শরীরে। শহরের প্রাচীন ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যই এমন উদ্যোগ।’’ মণ্ডপেও রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। প্রবেশ পথেও থাকবে দু’ফুট লম্বা এবং চওড়ার কাঠের একটি প্রতিমা। উষ্ণায়ন নিয়েও দেওয়া হবে বার্তা।
পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের হিমঘরের মাঠে রাজস্থানের জৈন মন্দিরের আদলে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ তৈরি করেছে ত্রিধারা। চড়াই, বাবুইয়ের মতো পাখি বাঁচানোর বার্তা দিয়ে মণ্ডপ সাজাচ্ছে কাঠিগঙ্গা শিবসঙ্ঘ ক্লাব। শোলা, খড়, খেজুর গাছের নানা অংশ, বাবুই পাখির বাসা দিয়ে মণ্ডপটি সাজিয়েছেন শিল্পী উত্তম বসু। মণ্ডপে থাকবে বেশ কিছু জীবন্ত পাখিও। ক্লাবের সদস্য বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘‘ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্কের মতো নানা কারণে পাখিরা হারিয়ে যাচ্ছে। ওদের বাঁচাতে হবে। সেই বার্তা দেওয়া হচ্ছে মণ্ডপে।’’ ৯ নম্বর ওয়ার্ড নিউ নবীন সঙ্ঘের সরস্বতী প্রতিমা চার হাতের। দেবীর চুল ফুলকপির শিকড়, মুখ বেলের মালা, দেহ থাইল্যান্ডের পাটকাঠি, কোমরের বিছা ঘাসফুল, শাড়ি ও নখে পেঁপে গাছের ছাল, চালচিত্রে সিম এবং বেদী তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে তালপাতা এবং দক্ষিণ এশিয়ার এক ধরনের ফল দিয়ে। প্রতিমাটি তৈরি করেছেন হাবড়ার শিল্পী ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার।