—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক দিকে বেআইনি দখলদারি, অন্য দিকে লাগাতার বেড়ে চলা টোটো। সবমিলিয়ে যানজটে হাঁসফাঁস করছে ‘পর্যটনের শহর’ কালনা। প্রাচীন এই শহরকে যানজট মুক্ত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে চলেছে মহকুমা প্রশাসন। সোমবার এ ব্যাপারে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও হয়।
বৈঠকে হাজির ছিলেন মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল, পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত, সহকারী পরিবহণ আধিকারিক (এআরটিও) অনুপম চক্রবর্তী, কালনার সিআই উত্তম মণ্ডল, আইএনটিটিইউসি-র শহর সভাপতি শান্তি সাহা ও চেম্বার অব কমার্স, টোটো চালক, বাজার কমিটির প্রতিনিধিরা। কয়েক বছর ধরে লাফিয়ে বেড়ে চলা টোটোর প্রসঙ্গ ওঠে বৈঠকে। ঝাঁকে ঝাঁকে রাস্তাঘাটে ঘোরা, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণে যানজট বাড়ছে বলে দাবি করা হয়। গ্রামাঞ্চলের প্রচুর টোটোও শহরে যাত্রী নিয়ে ঢুকছে বলে জানানো হয়।
কালনা শহরের রাস্তাগুলি এমনিতেই তেমন চওড়া নয়। তার উপর টোটোর সঙ্গে মালপত্র নিয়ে ট্রাক, ম্যাটাডরের মতো যানবাহন ঢুকলে অথবা দাঁড়িয়ে জিনিস নামালে আর চলাফেরা করার জায়গা মেলে না। সাধারণ মানুষ তো বটেই স্কুল পড়ুয়ারাও আটকে পড়ে যানজটে। আলোচনায় উঠে আসে বেআইনি দখলদারির বিষয়টিও।
পুরসভার কাছে মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা জানতে চান, অনুমোদিত টোটোর সংখ্যা কত। পুরসভা জানায়, ৪১৪টি। পুরসভার অনুমতি নিয়ে তারা একটি নম্বরও ব্যবহার করে গাড়িতে। কালনা ১ ও ২ ব্লকের পঞ্চায়েতগুলিও বেশ কিছু টোটো চালানোর অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা যায়। ঠিক হয়, বৈধ টোটোগুলিই শুধু যাতায়াত করবে শহরের রাস্তায়। পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, অনুমোদিত টোটোগুলির বর্তমান পরিস্থিতি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেখে নেওয়ার। কোনও ব্যক্তি যদি একাধিক টোটোর মালিক হন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। নতুন বছরের আগে টোটোর অনুমোদন পুনর্নবীকরণ করার প্রয়োজন হলে, সে দিকেও নজর দিতে বলা হয় পুরসভাকে।
আইএনটিটিইউসি-র শহর সভাপতি বলেন, ‘‘শহর এবং গ্রামে অনুমোদন রয়েছে এমন টোটো চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজন হলে বাড়ানো হবে টোটোর সংখ্যা।’’ পুলিশকেও রাস্তায় যেখানে সেখানে টোটো দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার বিষয়টি দেখতে বলা হয়।
কালনা চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের অসুবিধা হয় এমন কাজ না করেই প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যানজট দূর করতে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শহরের মূল রাস্তায় যাতে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারে, তার জন্য ‘নো এন্ট্রি’ চালু করার প্রস্তাবটিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় বৈঠকে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘শহরকে যানজট মুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। রূপায়নের আগে বৈঠকে আলোচনা হওয়া বিষয়গুলি আরও একবার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’
তিনি জানান, শহরের রাস্তায় মালপত্র রেখে কিছু দোকানদারের ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি বন্ধ করতে বাজার কমিটিকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। মাইকেও প্রচার হবে। এর পরেও যদি রাস্তা দখল করে কেউ ব্যবসা করেন, সে ক্ষেত্রে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।