এখানে কালীর রূপ কঙ্কালসার। শরীরের শিরা, ধমনী, অস্থি স্পষ্ট। — নিজস্ব চিত্র।
বন্যায় ভেসে গিয়েছিল বর্ধমানের কাঞ্চননগর। জল নামতেই নদীগর্ভ থেকে মিলেছিল কষ্টিপাথরের দেবী মূর্তি। দেবীর রূপ কঙ্কালের মতো। সেই থেকে কঙ্কালেশ্বরী কালী নামে পূজিত দেবী। কাঞ্চননগরের মন্দিরে নিত্যপুজো পান দেবী। তবে কালী পুজোয় ধুমধাম থাকে বেশি।
বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাবের উদ্যোগে কষ্টিপাথরের মূর্তি কাঞ্চন নগরের মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই থেকে নিত্যপুজো শুরু। শোনা যায়, মায়ের স্বপ্নাদেশ পান এক ধার্মিক পরিব্রাজক কমলানন্দ। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি দামোদরের তীরে ধোপাদের কাপড় কাচায় ব্যবহার হওয়া পাথরটি উদ্ধার করেন। সেই পাথরেই খোদাই করা ছিল দেবী মূর্তি। পরে পাথরের সেই দেবীমূর্তিই প্রতিষ্ঠিত হয় মন্দিরে।
কালী মূর্তির আবির্ভাব নিয়ে অন্য একটি গল্পও প্রচলিত রয়েছে। ১৯২৩ সালে দামোদরের জলে কাঞ্চননগর ভেসে যায়। বন্যার জল নামতেই দামোদরের গর্ভ থেকে উদ্ধার হয় কষ্টিপাথরের এই দেবীমূর্তি। তার পর তা প্রতিষ্ঠা করা হয় বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরের পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দিরে। সেই থেকে কঙ্কালেশ্বরী কালীর আরাধনা হয়ে আসছে। শ্রীচৈতন্যের দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের সঙ্গী ছিলেন গোবিন্দ দাস। মন্দিরের কাছেই তাঁর জন্মভিটে রয়েছে।
এখানে কালীর রূপ কঙ্কালসার। শরীরের শিরা, ধমনী, অস্থি স্পষ্ট। সে কারণে নাম ‘কঙ্কালেশ্বরী কালী’। দেবী অষ্টভুজা। শায়িত শিবের নাভি থেকে উৎপত্তি হয়েছে পদ্মের। সেই পদ্মের উপর বসে রয়েছেন দেবী। তাঁর চালচিত্রে একটি হাতি রয়েছে। চামুণ্ডা মতে দেবীর পুজো হয় এই মন্দিরে। বলি হয় না।
কালীপুজোর দিন মন্দিরে বহু ভক্তের সমাগম হয়। রাতে ভোগ খাওয়ানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মহাদেব রায় জানিয়েছেন, বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ড পুজো ও মন্দিরের দেখভাল করে। সকালে চিড়ে ভোগ ও রাতে খিচুড়ি ভোগ বিতরণ করা হয়। এছাড়া কালীপুজোয় বিশেষ ভোগ হয় মায়ের জন্য।