পড়ে রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র।
দিন চারেক আগে শেষ হয়েছে জয়দেব কেঁদুলি মেলা। এই মেলা বীরভূমের হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার শিবপুরের দিকে এর একটা অংশ বসছে। সেখানেও ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এর ফলে জেরে নোংরা হচ্ছে অজয় নদের চত্বর। মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে, অজয়ের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে রয়েছে প্লাস্টিক-সহ নানা বর্জ্য। পাশাপাশি, ফাঁকা জায়গায় শৌচকর্ম করায় এলাকায় দুর্গন্ধছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা দ্রুত এলাকাটিকে পরিষ্কার করার দাবি তুলেছেন। কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের সদস্য স্বপন সূত্রধর বলেন, “জয়দেব ও কাঁকসা— দুই প্রশাসনের তরফেই দ্রুত সব সাফাই করা হবে।”
এ বছর মেলা শুরু হয়েছিল ১৪ জানুয়ারি থেকে। শেষ হয়েছে ১৭ তারিখ। প্রশাসন সূত্রের দাবি, এবছর মেলায় তিন লক্ষেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছিল। যার একটা বড় অংশ এসেছিল পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার শিবপুর ঘাট হয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া,পূর্ব বর্ধমানের মতো জেলা থেকে বহু মানুষ এই শিবপুর হয়ে মেলায় গিয়েছিলেন। মকর সংক্রান্তির দিন অজয়ের দুই পারে বহু মানুষ স্নান করেছিলেন।
অভিযোগ, মেলা শেষ হতেই নোংরা-আবর্জনায় ভরে গিয়েছে অজয়ের শিবপুরের দিকে অংশ। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাড়ি পার্কিং, বিভিন্ন রকমের স্টল রয়েছে শিবপুরের প্রান্তে। কাজেই মানুষের আনাগোনা অনেকটাই বেশি হয়। আর এ সবের ফলে পুরো চত্বর ভরে গিয়েছে প্লাস্টিকে। বাসিন্দাদের দাবি, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্লাস্টিক। নানা রকমের খাবারের প্যাকেট। আবার মকর স্নানের জন্য শিবপুরের দিকে বেশ কয়েকটি ঘাট তৈরি করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। সে সব জায়গায় বহু মানুষ বহু মানুষ স্নান করেছেন। অনেকে নদে বিভিন্ন রকম বর্জ্য ফেলেছেন। ফুল, বেলপাতা-সহ পুজোর নানা উপকরণ অজয়ের পাড়ে ফেলায় দূষণ হচ্ছে। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করা হলেও, বহু মানুষ আশপাশের খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করেছেন। ফলে দুর্গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। এলাকাবাসী সুবিমল দাস, পূর্ণেন্দু রায়রা বলেন, “যে ভাবে নোংরা পড়ে আছে, তাতে এলাকা দূষিত হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে দ্রুত ব্যবস্থানেওয়া উচিত।”
সোমবার এলাকায় দেখা গেল, যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক, প্লাস্টিকের সামগ্রী পড়ে আছে। দুর্গন্ধ এতটাই যে, অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হলে মুখ-নাক ঢাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতি বছর মেলার পরে এলাকাগুলি পরিষ্কার করা হয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না।”