‘জহার থেকে জাহের’ পদযাত্রা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলির সুফল আদিবীসী সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে পূর্ব বর্ধমান জেলায় শুরু হল ‘জহার থেকে জাহের’ পদযাত্রা। ৭ দিন ধরে এই পদযাত্রা জেলার ১৭৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। প্রচুর গ্রাম ছুঁয়ে তা শেষ হবে জামালপুরে। মঙ্গলবার আউশগ্রামের জঙ্গল মহল থেকে এই পদযাত্রার সূচনা হল। ‘জহার থেকে জাহের’ পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন আদিবাসী সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট জনেরা। নেতৃত্বে জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু।
এ দিন সকাল থেকেই সাজ সাজ রব আউশগ্রামের সাহেবডাঙা এলাকায়। ঢোল, ডগর, কাড়া, নাকাড়া আর মাদল নিয়ে হাজির লোকশিল্পীদের দল। সাঁওতাল নাচ পরিবেশনের দলও ছিল। এ ছাড়া ছিল নানা ধরনের ট্যাবলো। ছিল রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা নিয়ে ফেস্টুন আর প্লাকার্ড। আদিবাসী রীতিতেই অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। তার পর শুরু হয় পদযাত্রা। উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে তাঁরা বোঝাবেন গত পাঁচ বছরে আদিবাসী সমাজের উন্নতিতে রাজ্য সরকার কী কী করেছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় তেমন ভাবে ভাল ফল করতে পারেনি শাসকদল তৃণমূল। তার পর থেকে আদিবাসী সমাজে প্রচারের কাজে জোর দিয়েছে দল। শুধু কাজ বা প্রচার নয়, মানুষের মনের কথা শোনার উপরেও জোর দিয়েছে তারা। সামনে বিধানসভা ভোট। বড় পরীক্ষা। দেবু টুডু দলের আদিবাসী সেলের প্রাক্তন প্রধান। বর্তমানে নতুন রাজ্য সমন্বয় কমিটির সদস্য ও দলের রাজ্য মুখপাত্র। এ ছাড়া তিনি অবিভক্ত বর্ধমান জেলার প্রাক্তন সভাধিপতি ও বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানের সহ-সভাধিপতি। তাই দেবুতেই আস্থা রেখেছে দল। গোটা পদযাত্রায় তিনি থাকবেন। আদিবাসী পোশাক পঞ্চু পরেই তাঁকে এ দিন দেখা গিয়েছে।
দেবু টুডুর দাবি, এই সরকার একটা সময়ে তিমিরে থাকা আদিবাসীদের উন্নয়নের স্রোতে নিয়ে এসেছে। একাধিক প্রকল্প হয়েছে। আদিবাসী এলাকায় শিক্ষা ও চিকিৎসায় প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আদিবাসীদের উপাসনাস্থল জাহের থানের উন্নয়ন হয়েছে। এসেছে জয় জোহর প্রকল্প। নানা প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য মিলছে। কিন্তু মানুষের কিছু প্রশ্ন থাকতে পারে। তাই এই পদযাত্রা।’’ সাধারণ মানুষের মুখে তাঁদের সমস্যা ও দাবির কথা শুনবেন বলে জানান আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার। তিনিও এই পদযাত্রায় শামিল হয়েছেন।