নালিশ শ্রমিক সংগঠনের

রোপওয়েজ়ের লোহা চুরির জেরেই বিপদ

শ্রমিক সংগঠনগুলি জানায়, রোপওয়েজে এই মুহূর্তে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা শ’দেড়েক। বেসরকারি সংস্থার ১৫৯ জন রক্ষী হিসেবে নিযুক্ত আছেন এই রোপওয়েজে। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে, এই ‘চুরি’, উঠেছে সেই প্রশ্নই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অণ্ডাল শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

জেকে রোপওয়েজ। নিজস্ব চিত্র

খুঁটি ভেঙে রেলগেটের কাছে কেব্‌ল পড়ে থাকার জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছিল অণ্ডালের বক্তারনগরে। মঙ্গলবার ওই ঘটনার পরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, যে সংস্থার কেব্‌ল ছিঁড়ে এই বিপত্তি, সেই জেকে রোপওয়েজ়ের পরিকাঠামো দিনের পর দিন চুরি যাচ্ছে। আরও অভিযোগ, ইসিএল তাদের অধীনস্থ এই সংস্থার পরিকাঠামোর নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে গা না করাতেই এই হাল।

Advertisement

শ্রমিক সংগঠনগুলি জানায়, রোপওয়েজে এই মুহূর্তে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা শ’দেড়েক। বেসরকারি সংস্থার ১৫৯ জন রক্ষী হিসেবে নিযুক্ত আছেন এই রোপওয়েজে। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে, এই ‘চুরি’, উঠেছে সেই প্রশ্নই। সিটু নেতা সৌরেন্দ্রপ্রসাদ পর্ধার দাবি, ‘‘১৫৯ জন রক্ষীকেই জেকে রোপওয়েজে ব্যবহার করা হয় না। তাঁদের অনেককেই ইসিএল কর্তৃপক্ষ কাজোড়া এরিয়ার নানা কোলিয়ারিতে কাজে লাগান। ফলে লোহা চুরি হচ্ছে। এর জেরে বাড়ছে বিপদও।’’

এলাকাবাসী ও অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে রোপওয়েজ়ের নানা পরিকাঠামো কেটে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, কাটা হচ্ছে লোহার যন্ত্রাংশ, কেব্‌ল, লোহার টাওয়ার-সহ নানা পরিকাঠামো। এই পরিস্থিতিতে পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে মঙ্গলবারের মতো বিপত্তি ফের হতে পারে বলে আশঙ্কা এআইটিইউসি নেতা জগদীশ গোপের।

Advertisement

কিন্তু, কেন ইসিএলের অধীনস্থ এই সংস্থাটির রক্ষণাবেক্ষণে ইসিএল গা করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সিটু, এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি, কেকেএসসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ২০১৮-র অগস্টে রোপওয়েজ়ের পরিকাঠামো চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে। সেই সময়ে আরও অভিযোগ ওঠে, ইসিএল এ ভাবে সংস্থাটিকে বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কেকেএসসি নেতা দীপককুমার মিশ্রের দাবি, ‘‘একসময়ে এখানে সতেরোশো কর্মী কাজ করতেন। বর্তমানে তা শ’দেড়েকে ঠেকেছে। সংস্থাটি বন্ধ করতে চাইছে ইসিএল। অথচ, চাইলেই এই সংস্থার পুনরুজ্জীবন করা সম্ভব। সেই চেষ্টাই করা হয় না।’’

ইসিএল সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, এক দশক আগে মদনপুর এলাকার বাসিন্দারা সংস্থার সিএমডি, জেলাশাসক, কয়লা মন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে গ্রামরক্ষার আর্জি জানান। সেই সময়ে গ্রামবাসীর অভিযোগ ছিল, দামোদরের পাড় থেকে বালি কাটা হচ্ছে। অথচ, নিয়ম অনুযায়ী পাড় থেকে দু’শো মিটার দূরে বালি কাটার কথা। কিন্তু অভিযোগ ওঠার পরেই ওই এলাকায় বালি কাটার কাজই বন্ধ করে দেয় ইসিএল। বর্তমানে অন্য এলাকার ঘাট থেকে ডুলির মাধ্যমে নয়, বরং ডাম্পার ও ট্রাকে করে বালি পরিবহণ করে ইসিএল।

যদিও নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ প্রসঙ্গে ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে রোপওয়েজের ডুলি চলাচলের প্রাসঙ্গিকতা কতখানি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও গাফিলতি নেই।’’ জেকে রোপওয়েজের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রশান্ত চৌধুরীর দাবি, ‘‘রোপওয়েজের পরিকাঠামো কেটে নিলাম করা হবে। তার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement