নরেন্দ্র মোদী।
‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার প্রকল্পে দুর্গাপুরের বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ‘মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশন’কে (এমএএমসি) অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত কারখানা চালুর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছে আইএনটিইউসি। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
খনির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের অধীনে এমএএমসি চালু হয় ১৯৬৫-তে। ১৯৯২-এ ‘বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন’ (বিআইএফআর)-এর অধীনে চলে যায় কারখানা। ২০০২-এর ৩ জানুয়ারি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ফের কারখানা চালু করার জন্য ২০০৭ সালের ১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ বিইএমএল, সিআইএল ও ডিভিসি যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ, ২৬ শতাংশ ও ২৬ শতাংশ হারে কনসর্টিয়াম গড়ার জন্য ‘মৌ’ সই করে।
২০১০-এ কলকাতা হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ একশো কোটি টাকা দর দিয়ে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায় কনসর্টিয়াম। কারখানার নতুন নাম হয় এমএএমসি ইন্ডাস্ট্রিজ় লিমিটেড (এমএএমসিআইএল)। ঠিক হয়, উৎপাদনের দায়িত্বে থাকবে বিইএমএল। উৎপাদিত খনি যন্ত্রাংশ কিনবে সিআইএল। সিআইএল-এর কাছ থেকে কয়লা তুলবে ডিভিসি। তিন সংস্থা মিলে কারখানা চালু করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্সও গড়ে। কিন্তু প্রায় ১০ বছর পরেও কারখানা
চালু হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে কারখানা চালুর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে আইএনটিইউসি। আইএনটিইউসি প্রভাবিত ‘হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত গড়ার কথা বলছেন। দেশীয় তিন সংস্থা মিলে এমএএমসি চালু করলে দেশের খনির কাজে সুবিধা হবে। তাই দ্রুত কারখানা চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মাস দু’য়েক আগে চিঠিও দিয়েছি আমরা।’’ তিনি জানান, তিন সংস্থা নিজেদের মধ্যে ‘শেয়ার হোল্ডার এগ্রিমেন্ট’ চূড়ান্ত করে। তবে তা এখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদন পায়নি। কারখানার সিটু নেতা বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘কারখানা খোলার বিষয়ে কেন্দ্র, রাজ্য, কোনও তরফেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নজরে আসেনি।’’ সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘কারখানাটির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কিত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’ কারখানাটি যে ওয়ার্ডে অবস্থিত সেই ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই বলেন, ‘‘যদি এলাকার সাংসদ এ বিষয়ে উদ্যোগী হন, সে তো খুব ভাল কথা। কাউন্সিলর হিসেবে আমার দিক থেকে যদি কিছু করার থাকে আমি করব।’’