প্রতীকী ছবি।
আইএনটিটিইউসি-র দ্বন্দ্বের জেরে দুর্গাপুরের কারখানাগুলিতে লোক নিয়োগ নিয়ে অশান্তি চলছে। এর জেরে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষের। এমনই দাবি করে দুর্গাপুরে শিল্প বাঁচানোর দাবিতে রবিবার কোকআভেন থানায় বিক্ষোভ দেখানোর পরে স্মারকলিপি দিল বাম প্রভাবিত যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব।
ডিওয়াইএফ-এর অভিযোগ, কারখানাগুলিতে লোক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে। ফলে, দুর্গাপুরের বেকারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুরের একাধিক কারখানা কর্তৃপক্ষও সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন।
সম্প্রতি সগড়ভাঙায় গ্রাফাইটের ইলেকট্রোড ও কার্বনের নানা সামগ্রী উৎপাদনকারী বেসরকারি কারখানায় আইএনটিটিইউসি-র দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছিল। অন্য কারখানাগুলিতে এ ভাবে প্রকাশ্যে সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে দু’পক্ষের কর্মসূচি-পাল্টা কর্মসূচির জেরে, মনে করছেন বেশ কয়েকটি কারখানার কর্তৃপক্ষ। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার আধিকারিক বলেন, ‘‘একই বিষয় নিয়ে দু’পক্ষ আলাদা আলাদা করে কর্মসূচি নিচ্ছে। ফলে, কারখানা পরিচালনার সামগ্রিক নীতি তৈরি করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ বামুনাড়া শিল্পতালুকের ইস্পাত অনুসারী একটি বেসরকারি কারখানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ক্ষমতা দেখাতে সামান্য বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’’
আইএনটিটিউসি-র স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশের দাবি, এই ‘দ্বন্দ্ব’-এর নেপথ্যে সংগঠনের বর্তমান জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের পারস্পরিক টানাপড়েন। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনের বিষয়ে নাক না গলানোর পরামর্শ দিয়ে যান প্রভাতবাবুকে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। নাম না করে সেই প্রসঙ্গ তুলে বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘দলনেত্রীর সিদ্ধান্তকে যাঁরা চ্যালেঞ্জ করেন, তাঁরা দল বা সংগঠনের কেউ হতে পারেন না। স্থানীয়দের বঞ্চিত করে অর্থের বিনিময়ে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ মানা হবে না।’’ পাশাপাশি, সংগঠনের জন্য শিল্পের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি প্রভাতবাবুর সঙ্গে।
তবে, সিটু নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের তোপ, ‘‘গত কয়েক বছরে একটিও নতুন কারখানা গড়ে ওঠেনি। বরং বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনের নামে যে নৈরাজ্য চলছে, তাতে বাকি কারখানাগুলিও বন্ধ হয়ে যাবে। দুর্গাপুরের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য অনিশ্চয়তা বাড়বে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্বনাথবাবু।