ধর্মঘটের বিরোধিতায় মিছিল আইএনটিটিইউসি-র, আসানসোলে।
ধর্মঘটে যে তাদের সায় নেই, তা আগেই জানিয়েছিল সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস এবং তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। বৃহস্পতিবার দশটি শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের দিনে দেখা গেল, আইএনটিটিইউসি নানা জায়গায় পথে নেমেছে। নেতৃত্বের দাবি, তা ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে’। তবে ধর্মঘটে যোগ না দিলেও ‘বিরোধিতা’য় পথেও দেখা যায়নি বিএমএস নেতা-কর্মীদের। যদিও এ দিন ওই দুইটি শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা দেখে তাদের একই বন্ধনীতে রেখে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
এ দিন সকালেই ডিএসপি টাউনশিপের কণিষ্ক রোডে দেখা যায়, ডিএসপি-র আইএনটিটিইউসি নেতা জয়ন্ত রক্ষিত-সহ আরও অনেকেই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। কাজে যাওয়া শ্রমিকদের শুভেচ্ছাও জানান তাঁরা। জয়ন্তবাবুর দাবি, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে সংসদের ভিতরে ও বাইরে তৃণমূল লড়াই করছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সিটু, আইএনটিইউসি-সহ অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলি নিজেদের অস্তিত্ব দেখাতে ভোটের আগে এমন বন্ধ ডেকে জনজীবন স্তব্ধ করে দেব, এটা মানুষ মানবে না। ওদের ধর্মঘট ব্যর্থ।’’ আসানসোলেও ধর্মঘটের বিরোধিতায় আইএনটিটিইউসি-কে পথে নামতে দেখা গিয়েছে।
এ দিকে, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অন্য কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির মতো বিএমএস-কেও আন্দোলন করতে দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। কিন্তু ধর্মঘটে তাদের সায় নেই বলে আগেভাগেই জানিয়েছিল বিএমএস। এ দিনও, সংগঠনের জেলা সম্পাদক অসীম প্রামাণিক দাবি করেন, ‘‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকে ডাকা ধর্মঘটে আমরা থাকি না। মানুষকে অকারণে সমস্যায় ফেলার পক্ষে আমরা নই।’’
এলাকার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জেলার বেশির ভাগ বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে শ্রমিক পরিবারের ভোটের বড় প্রভাব রয়েছে। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসন, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় বাম-কংগ্রেসের জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিল সিটু-সহ অন্য বাম প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনগুলি এবং আইএনটিইউসি। সেই শ্রমিকদের ‘মন’-কে নিজেদের দিকে রাখতেই সিটু, আইএনটিইউসি-র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে ‘সক্রিয়তা’ বলে অভিযোগ বিএমএস এবং আইএনটিটিইউসি-র। যদিও সিটু ও আইএনটিইউসি নেতৃত্ব সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
পাশাপাশি, যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘কেন্দ্রের নানা জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এই ধর্মঘট। বিএমএস ও আইএনটিটিইউসি-র এতে না থাকার অর্থ, বিজেপি ও তৃণমূল হাত ধরাধরি করে চলে।’’ একই কটাক্ষ করেন আইএনটিইউসি নেতা তথা কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীও।