‘কাটমানি’ নিয়ে কর্মীদের বার্তা তৃণমূলে

সম্প্রতি কল্যাণেশ্বরীতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল শোধনাগারে টানা বিক্ষোভ-অবস্থান পালন করেন তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক। তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই কেন্দ্রে ঠিকাদার সংস্থায় স্থানীয় কয়েকজন যুবককে সরিয়ে বহিরাগত কিছু শ্রমিককে নিয়োগ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোথাও কাজে নিয়োগ, কোথাও আবার স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা— এমন নানা কাজের জন্য জেলার নানা জায়গায় কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে। দলের একাংশও সরব হয়েছেন এ নিয়ে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়ে বসেছেন জেলা আইএনটিটিইউসি এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। দল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জেলা নেতৃত্ব সূত্রের খবর।

Advertisement

সম্প্রতি কল্যাণেশ্বরীতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল শোধনাগারে টানা বিক্ষোভ-অবস্থান পালন করেন তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক। তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই কেন্দ্রে ঠিকাদার সংস্থায় স্থানীয় কয়েকজন যুবককে সরিয়ে বহিরাগত কিছু শ্রমিককে নিয়োগ করা হয়েছে। তৃণমূলেরই কিছু নেতা ‘কাটমানি’র বিনিময়ে বাইরের লোকজনকে নিয়োগ করেছেন বলে তাঁরা অভিযোগ তোলেন। কাঁকসায় এক বেসরকারি কারখানায় শ্রমিকদের স্থায়ী ভাবে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে দুই আইএনটিটিইউসি নেতা টাকা আদায় করতেন, এই অভিযোগে কয়েক দিন আগে সরব হন কিছু শ্রমিক-কর্মী।

বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাতেও ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘কাটমানি’র অভিযোগ উঠেছে। কুলটির রেল ওয়াগন কারখানায় এ নিয়ে মাঝে-মধ্যে গোলমালও বেধেছে। জেলা আইএনটিটিইউসি সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নেতারা জেনেছেন, প্রথমে স্থানীয় কর্মীদের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থায় নিয়োগের জন্য তদ্বির করেন কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মী। তার বিনিময়ে ওই কর্মীদের কাছ থেকে বেতনের একটি অংশ নেওয়া হয়। মাস কয়েক কাজ করার পরে কোনও ছুতোয় স্থানীয় ওই কর্মীদের সরিয়ে বহিরাগতদের নিয়োগ করা হয়। তখন ওই বহিরাগতদের কাছে কিছু টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বার্নপুরে ইস্কো কারখানাতেও ঠিকা শ্রমিক নিয়োগে ‘কাটমানি’র লেনদেনে কিছু তৃণমূল কর্মীর নাম জড়িয়েছে বলে দলের একটি সূত্রের দাবি।

Advertisement

আইএনটিটিইউসি এবং তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কাটমানির বিনিময়ে ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ আমিও পেয়েছি। এ নিয়ে দলের তরফে তদন্তও শুরু হয়েছে।’’ শিবদাসনের দাবি, কিছু অসাধু নেতা-কর্মী দলের ভাবমূর্তি খারাপ করছেন। সে কারণেই লোকসভা ভোটে দলের ভরাডুবি হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলনেত্রী এ সব বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হয়েছে।’’ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে এলাকা ধরে তদন্ত অভিযান শুরু হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তীর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতারা যে হারে কাটমানি আদায় করেছেন তাতে মানুষ তাঁদের উপরে আর ভরসা রাখছেন না। এখন বিপাকে পড়ে মুখরক্ষার চেষ্টা করে আর লাভ হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement