রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার (আরএসবিওয়াই) কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না করে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া বামচাঁদাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। পরে মোটা টাকার বিনিময়ে অস্ত্রোপচার করা হয়।
পায়ের শিরা কেটে যাওয়ায় গত ১৩ জানুয়ারি বর্ধমানের ভাতছালার বাসিন্দা, বছর চল্লিশের বিশ্বনাথ দাসকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্বনাথবাবুর মা গীতাদেবীর কার্ড রয়েছে। তিনি জানান, কার্ড থেকে সুবিধা প্রাপকদের মধ্যে ছেলেরও নাম রয়েছে। গীতাদেবীর অভিযোগ, ওই দিন কার্ড দেখানোর পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা করতে অস্বীকার করেন। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ জানান, ওই কার্ডে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। তার জন্য টাকা লাগবে। গীতাদেবী বলেন, “কিছু টাকা জোগাড় করে জমা দিই। অস্ত্রোপচারের পরে ছেলেকে ছাড়ার সময়েও কার্ডের সুবিধা মেলেনি। উল্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বাকি টাকা দিলে তবেই ছেলেকে ছাড়া হবে।” বুধবার বাড়িতে শুয়ে বিশ্বনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমাদের মতো অনেককেই ওই হাসপাতালে গিয়ে হয়রান হতে হচ্ছে।” তাঁর স্ত্রী আরতিদেবী বলেন, “মাসে ১০ টাকা সুদে ৪০ হাজার টাকা ধার করতে হয়েছে। ওই টাকা কী করে শোধ হবে, কে জানে।”
গীতাদেবী জেলা আরএসবিওয়াই দফতর, সিএমওএইচ ও কেন্দ্রীয় সরকারের জন অভিযোগ দফতরে অভিযোগ জানান। কেন্দ্রীয় সরকারের জন অভিযোগ দফতরের আরএসবিওয়াইয়ের কো-অর্ডিনেটর ইমরান আলিখান তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি ই-মেলে রাজ্যের আরএসবিওয়াই দফতরের বিকে দত্তকে সেই মর্মে নির্দেশও পাঠিয়েছেন বলে খবর। প্রসঙ্গত আরএসবিওয়াই কার্ড থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ মেলে।
বর্ধমানের আরএসবিওয়াই দফতরের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আরএসবিওয়াই সুবিধা দেওয়া নিয়ে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রতি দিনই প্রচুর অভিযোগ আসে। তবে গীতাদেবীর অভিযোগের বিষয়টি নোডাল অফিসার বলতে পারবেন।” নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ দত্তগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালকে শো-কজ করা হবে। জবাব মেলার পরে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” যদিও বুধবার হাসপাতালের কর্ণধার সৌমেন সাহা শিকদার বলেন, “এ রকম হওয়ার কথা নয়। আমি বাইরে রয়েছি। ফিরে বিষয়টি খোঁজ নেব।”