উদ্ধার বোমা। নিজস্ব চিত্র।
অস্থায়ী অফিস ঘরের ‘দখল’ নিয়ে বুধবার রাতে অশান্ত হল বর্ধমান শহরের জেলখানা মোড় ও রসিকপুর এলাকা। বোমাবাজিও হয় রসিকপুরে। পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কোনও পক্ষ অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার বাসিন্দা, দলের অন্যতম জেলা সম্পাদক আব্দুর রবের অনুগামীদের সঙ্গে একদা সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত মহম্মদ আসরাফুদ্দিন ওরফে বাবুর গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্ব’ দীর্ঘ দিনের। এর আগেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কয়েকবার মারপিট-অশান্তি হয়েছে। সম্প্রতি আসরাফুদ্দিন দলের সংখ্যালঘু সেলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি হয়েছেন। আব্দুর রবের অভিযোগ, “জেলখানা মোড়ে আমার একটি অফিসঘর রয়েছে, যার পোশাকি নাম ‘মা-মাটি-মানুষ সেবা প্রতিষ্ঠান’। ওই ঘরটি দখল করতে গিয়েছিল বাবুর অনুগামীরা। বাধা দেওয়ায় হামলা চালানো হয়। অফিস দখল নেওয়ার জন্য বহিরাগতদের গাড়ি এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে।’’
পুলিশ জানায়, জেলখানা মোড়ে গোলমাল নিয়ন্ত্রণের ফাঁকেই রসিকপুরে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বর্ধমান থানার পুলিশের বড় বাহিনী পৌঁছয়। ‘স্ট্র্যাকো’ বাহিনী এলাকায় তল্লাশি চালায়। ‘চিলড্রেন্স পার্ক’-এর ভিতর থেকে চারটি বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
আসরাফুদ্দিনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওই পার্কে আব্দুর রবের অনুগামীরা অসামাজিক কাজকর্ম করে। তারাই বোমা রেখেছে, বোমাবাজিও করেছে। রাস্তার ধারে সরকারি জায়গা দখল করে অফিস তৈরি করে কেন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হবে, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন আমাদের ছেলেরা। সে জন্যই গোলমাল।’’ যদিও আব্দুর রবের পাল্টা দাবি, ‘‘বহিরাগতদের ওই পার্কে ঢুকতে-বেরোতে দেখা গিয়েছে। তারাই বোমা রেখেছে।’’
শহরে বোমাবাজির জেরে সাধারণ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, এই দাবিতে বিজেপি বর্ধমান থানায় স্মারকলিপি দিয়েছে। বিজেপির দাবি, এলাকার কিছু যুবক সম্প্রতি আব্দুর রবের গোষ্ঠী ছেড়ে আসরাফুদ্দিনের দিকে ভিড়েছে। তারাই ওই কার্যালয় দখলে নিতে চাইছিল। বিজেপি নেতা দেবাশিস সরকারের অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকায় আমাদের নেতা-কর্মীদেরও মারধর করা হয়েছে। এ বার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বোমাবাজির ঘটনা ঘটল।’’
জেলা তৃণমূল সূত্রের দাবি, দলীয় নেতৃত্ব এই ঘটনা নিয়ে পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।