কালনা স্টেশনে রেলের কাজ পরিদর্শনে ডিআরএম। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় বছর খানেক আগে ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পে অম্বিকা কালনা স্টেশনকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলার ঘোষণা হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, কাজ শুরু হলেও তাতে গতি নেই। শুক্রবার প্রকল্প পরিদর্শন করেন পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কুমার-সহ ১১ জন। রেলের জমি দখল করে বসবাস ও ব্যবসা যাঁরা করছেন, তাঁদের সরে যাওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
ডিআরএম বলেন, ‘‘কী কাজ করার কথা, কতটুকু হয়েছে, তা দেখার জন্য এসেছি। যাঁরা বেআইনি ভাবে রেলের জায়গা দখল করে রয়েছেন, তাঁদের সরে যাওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। এর পরেও না সরলে রেল নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেবে।’’ তাঁর মতে, ‘‘যে ভাবে কাজ এগচ্ছে তাতে শেষ হতে ২০২৫-র মার্চ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘রেল তার এলাকায় স্টল চালানোর অনুমতি দেয়। অবৈধ ভাবে কেউ স্টল চালালে তা হটিয়ে দেওয়া হয়। এখানে সে ধরনের কিছু হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলের জায়গায় আবর্জনা ফেললে সংশ্লিষ্টদের জরিমানা করতে বলা হয়েছে।’’
রেল সূত্রের খবর, অমৃত ভারত প্রকল্পে দেশের ৫০৮ স্টেশনের আধুনিকীকরণ হবে। সেই তালিকায় রয়েছে রাজ্যের ১২টি জেলার ৩৭টি স্টেশন। তার মধ্যে হাওড়া ডিভিশনের অন্তর্গত বর্ধমান, রামপুরহাট, কাটোয়া, আজিমগঞ্জ, শেওড়াফুলি, অম্বিকা কালনা, তারকেশ্বর, নবদ্বীপ ধাম, বোলপুর এবং শান্তিনিকেতনও রয়েছে। অম্বিকা কালনা স্টেশনে শৌচাগার, বিশ্রামাগার, চলমান সিঁড়ি, আরপিএফ এবং জিআরপির আধুনিক কার্যালয়, আধুনিক টিকিট কাউন্টার, পার্কিং পরিষেবা, চওড়া রাস্তা নির্মাণ-সহ গুচ্ছ কাজ হওয়ার কথা।
এই স্টেশনের দু’পাশে রেলের জায়গায় বহু বছর ধরে বাস করছেন বেশ কিছু মানুষ। সাইকেল গ্যারাজ, মুদিখানা, চায়ের দোকান গড়ে উঠেছে রেলের জায়গায়। রেলের তরফে দখলদারদের জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তবে তাতে কাজ হয়নি। কয়েক মাস আগে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে এবং আর কিছু বিভিন্ন জায়গায় বিশ্রামাগার নির্মাণ-সহ কিছু কাজ হলেও বাকি রয়েছে অনেক কিছুই। ফলে ক্ষোভও রয়েছে অনেকের মধ্যে। রেলের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘প্রকল্প রূপায়ণ করতে গেলে বেআইনি দখলদারদের সরানো জরুরি। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয়, তার জন্যই ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে।’’ এলাকাবাসী সুনির্মল মণ্ডলের কথায়, ‘‘অম্বিকা কালনা স্টেশনের ভোল বদলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। এক বছর হয়ে গেলেও তেমন কিছু দেখা যায়নি। কাজের যা গতি, তাতে কত বছরে যে শেষ হবে, কে জানে।’’
এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ রেলের প্রতিনিধিরা স্টেশনে আসেন। কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন।এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে নামার পথে জঞ্জালের স্তূপ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন কর্তারা। রেলের জমিতে সাইকেল গ্যারাজ এবং দোকান দেখে পরিদর্শনকারীরা নিয়ম মেনে জরিমানা করার কথাও বলেন।