—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার কাজের দরপত্র ডাকা হয়েছে দেড় বছর আগে। কিন্তু নকশা অনুমোদিত না হওয়ায় বরাত দেওয়া যায়নি। রেল সূত্রের খবর, সেই কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বর্ধমানে ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পে নতুন ভবন তৈরির সঙ্গে পুরনো রেল সেতুর জায়গাতেই ‘ফুট ওভারব্রিজ’ ( এফওবি) তৈরি করা হবে। তাতে বর্ধমান শহরের সঙ্গে বাজেপ্রতাপপুরের হাঁটা পথে যোগাযোগের পথ তৈরি
হয়ে যাবে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রকে পাশে নিয়ে সম্প্রতি বর্ধমানে রেলের হাওড়া ডিভিশনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “কাজ শুরু হতে এখনও এক বছর সময় লাগবে। বর্ধমানে নতুন ভবনের সঙ্গেই ওই এফওবি-টি তৈরি হবে।” জানা গিয়েছে, এফওবি থেকে সরাসরি প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার
ব্যবস্থা থাকবে।
গত বছরের প্রথম দিকে বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপরে পুরনো সেতুটি ভেঙে দেয় রেল। সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই বর্ধমান শহরের ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ ‘এফওবি’ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তাঁদের দাবি, শহরের মূল অংশে যেতে গেলে রেল সেতু ব্যবহার করতেই হবে। এ ছাড়া, বর্ধমান-কাটোয়া রুটের বাসযাত্রীদের বড় অংশ বাজেপ্রতাপপুরের কাছে নেমে পায়ে হেঁটে বর্ধমান শহরে যান। তাঁদের দাবি, এখন নতুন ঝুলন্ত সেতু দিয়ে বর্ধমান শহরে পৌঁছতে অনেক সময় লাগে। সেতু বেশ কিছুটা উঁচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ ও মহিলাদের ওঠানামায় কষ্ট হয়। দ্রুত গতিতে যানবাহন যাতায়াত করায় সেতু পারাপারে ঝুঁকিও রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২২-র ২৮ মার্চ তৎকালীন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, এডিআরএম (হাওড়া) একটি বৈঠক করেন। তাতে সিদ্ধান্ত হয়, পুরনো সেতু ভাঙার পরে ঠিক ওই জায়গাতেই এফওবি হবে। জেলাশাকের স্বাক্ষর থাকা ওই নথিতে জানানো হয়েছিল, রেল সেতু ভাঙার দেড় বছরের মধ্যে নতুন এফওবি তৈরি করতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন রেলের সিনিয়র ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার (কো-অর্ডিনেশন)। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, “সেতু ভাঙার পরে দেড় বছর কেটে গেল। কিন্তু এখনও এফওবি তৈরির জন্য মাটি খোঁড়াও হয়নি। আমাদের বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
রেল সূত্রে জানা যায়, ১২০ মিটারের মতো লম্বা আর ছ’মিটারের মতো চওড়া হবে এফওবি-টি। তার মাঝে থাকবে ‘ডিভাইডার’। এর এক দিক দিয়ে শহরের একাংশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্য দিক ব্যবহার করবেন যাত্রীরা। এফওবি’র সঙ্গে প্ল্যাটফর্মগুলির যোগাযোগ করা থাকবে। এফওবি ব্যবহারকারীদের থেকে প্লাটফর্ম টিকিট চাওয়া হবে না। এই কাজে রেলের খরচ হবে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।