প্রতীক রইল, প্রার্থী ফিরলেন পুরনো দলে

ছিল জোড়া পাতা। হয়ে গেল জোড়া ফুল। পুরভোটের প্রচারে ঢাকে কাঠি পড়ার সঙ্গেসঙ্গেই কালনা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জোড়া পাতা প্রতীকের নির্দল প্রার্থী, এলাকার তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি জানালেন, তিনি তৃণমূলের হয়েই প্রচার করবেন। একমাত্র গোঁজ কাটা দূর হওয়ায় কালনা পুরসভায় স্বস্তির শ্বাস ফেলছে শহর তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩১
Share:

বাঁ দিকে, গোপাল তিওয়ারি। ডান দিকে, শহরের দেওয়ালে আনন্দ দত্তের প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

ছিল জোড়া পাতা। হয়ে গেল জোড়া ফুল।

Advertisement

পুরভোটের প্রচারে ঢাকে কাঠি পড়ার সঙ্গেসঙ্গেই কালনা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জোড়া পাতা প্রতীকের নির্দল প্রার্থী, এলাকার তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি জানালেন, তিনি তৃণমূলের হয়েই প্রচার করবেন। একমাত্র গোঁজ কাটা দূর হওয়ায় কালনা পুরসভায় স্বস্তির শ্বাস ফেলছে শহর তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এ বার কালনা শহরে পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে প্রচুর আবেদন জমা পড়ে। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর অনেকেই প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনটি ওয়ার্ডে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন তোলেন তিন তৃণমূল নেতা। তবে শুরু থেকেই এই বিষয়ে কড়া অবস্থান ছিল দলের। তৃণমূলের বৈঠকে সাফ জানানো হয়, দলের বিরুদ্ধে যদি কেউ গোঁজ প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বহিষ্কার করাও হতে পারে। কালনা পুরভোটে তৃণমূলের দলীয় পর্যবেক্ষক, কালনা ২ ব্লকের সভাপতি প্রণব রায় এবং বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বিষয়টি তিন গোঁজ প্রার্থীকেই জানিয়ে দেন। এরপর দু’জন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিলেও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি নির্দল প্রার্থী হিসাবে থেকে যান। তৃণমূল নেতারা শেষ অবধি তাঁকে বুঝিয়ে মনোনয়ন তুলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি। শহর তৃণমূলের এক নেতা জানান, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন গোপাল ছিলেন কালনার বাইরে। এরপর তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে জোড়া পাতা প্রতীক পান। জোড়া পাতায় ছেয়ে যায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়াল। দলের একাংশের দাবি, বহু তৃণমূল কর্মী গোপালবাবুর হয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারেও নেমে পড়েন। চকবাজার এলাকার একটি তৃণমূলের কার্যালয় দখল করে সেটিকে জোড়া পাতা শিবিরের নির্বাচনী কার্যালয় বানানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে গোপালবাবু জানিয়ে দেন, নির্দল হিসাবে নয়। ওয়ার্ডে তিনি এবং তার অনুগামীরা কাজ করবেন তৃণমূলের হয়েই।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সারা বছর ধরে সংগঠনের কাজ করেন গোপালবাবু। পুর নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করার জন্য প্রাথমিক কথাও হয়েছিল। তবে শেষ দিকে পরিস্থিতি বদলায়। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার আনন্দ দত্ত তৃণমূল শিবির চলে যাওয়াই দল তাঁকেই শেষ পর্যন্ত টিকিট দেয়। তাতেই বেজায় চটেন গোপালবাবু এবং তার অনুগামীরা। এর পরই গোপালবাবু নির্দলের টিকিটে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে তাঁর অনুগামীদের দাবি। কালনা পুরসভার দলীয় পর্যবেক্ষক প্রণববাবুও বুধবার বলেন, ‘‘দলের হয়েই প্রচারে নামবে গোপাল। তাঁর ওয়ার্ডে যেখানে যেখানে জোড়া পাতা আঁকা হয়েছিল সেখানে মুছে ঘাসফুল আঁকা হবে।’’

কিন্তু তালিকায় যে জোড়া পাতাতেই গোপালবাবুর নাম রয়ে গেল! প্রণববাবুর দাবি, প্রচার পর্বে ওয়ার্ডের সব বাড়িতে লিফলেট বিলি করে জানিয়ে দেওয়া হবে যে গোপালবাবু তৃণমূলের হয়েই প্রচার করবেন। তাহলে ভোটারদের কোনও সংশয় থাকবে না।

আর দু’দিন আগেও যিনি বিরোধী পক্ষ ছিলেন সেই গোপালবাবুকে নিয়ে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী, সদ্য কংগ্রেস থেকে আসা আনন্দ দত্ত বলেন, ‘‘উনি দলেরই লোক। কোনও কারণে অভিমানে সরে গিয়েছিলেন। দল তাঁকে যোগ্য সম্মান দেবে। উনি ফিরে আসায় এই ওয়ার্ডে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হবে।’’

আর যাঁকে নিয়ে এত টানাপড়েন সেই গোপাল তিওয়ারির উত্তর, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে আমি সরে এসেছি। আর কিছু এখনও ঠিক করিনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement