Vande Mataram

Independence Day 2022: এ মন্দিরে দেবী ভারতমাতা, পুজো হয় ‘বন্দে মাতরম্’-এ

এই মন্দিরের সঙ্গে দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের নাম কী ভাবে জুড়ে গিয়েছে, তা জানা যায় না।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২২ ০৯:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

‘ওঁ বন্দে মাতরম্ জয় জয় ভারত বর্ষম। দেবী চৌধুরাণী ভবানী পাঠক ভারত মাতার আশ্রম।’— দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা উপনগরীর প্রাচীন কালী মন্দিরের ফলকে লেখা রয়েছে এ কথা। এখনও প্রতিদিন সন্ধ্যায় পুজোর সময় উচ্চারিত হয় ‘বন্দে মাতরম্ জয় জয় ভারতবর্ষম্’ মন্ত্র।

Advertisement

মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, দেবী এখানে মা ভবানী হিসেবে পরিচিত। পূজিতা হন ভারতমাতা রূপে। পাথরের দেওয়ালের প্রাচীন মন্দির ঢাকা পড়ে গিয়েছে বহু পুরনো একটি বটগাছের ঝুরিতে। পাশেই গড়ে উঠেছে আধুনিক মন্দির। মন্দির চত্বরে রয়েছে প্রাচীন একটি কুয়ো। মন্দিরের পাশে আছে বেলেপাথরের তৈরি একটি ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ। পিছনে রয়েছে বিশাল এক জলাশয়।এগুলি সবই এলাকার প্রাচীনত্বের নিদর্শন, এমনই দাবি কর্তৃপক্ষের। জলাশয়টি লোকমুখে ‘ইছাই সরোবর’ হিসেবে পরিচিত।

যদিও এই মন্দিরের সঙ্গে দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের নাম কী ভাবে জুড়ে গিয়েছে, তা জানা যায় না। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুশীল ভট্টাচার্য বলেন, “অনেকে মনে করেন, এই দুর্গাপুরই নাকি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কথিত দেবী চৌধুরানির আবাসস্থল। এই ধারণার কোনও ভিত্তি নেই। এটি রাঢ়ভূমি। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দেবী চৌধুরাণী’র আখ্যান ভাগ রচিত হয়েছে বরেন্দ্রভূমের রংপুর জেলায় একটি বনাঞ্চল নিয়ে। যেটি এখন বাংলাদেশে।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরের সেবাইত হিসেবে আগে ছিলেন নন্দলাল চট্টোপাধ্যায়। এখন তাঁর ভাইপো মিলন এবং তাঁর জামাই তারক মুখোপাধ্যায় রয়েছেন পুজোর দায়িত্বে। এ ছাড়াও দেখভাল করেন নন্দলালের স্ত্রী রিনা। তিনি জানান, কথিত আছে, গভীর অরণ্যে ঢাকা দুর্গাপুরে ব্রিটিশ আমলে বিপ্লবীরা আসতেন আত্মগোপন করতে। এখন যেখানে অম্বুজা উপনগরী গড়ে উঠেছে, তা তখন ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। সে জঙ্গলের ভিতরে ছিল এই মন্দির। সেখানে উঠতেন বিপ্লবীরা। মন্দিরের বিগ্রহকে ভারতমাতা রূপে পুজো করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েবেরোতেন ওঁরা।

মিলন বলেন, “এমন এক প্রেক্ষাপটের কারণেই মায়ের পুজোর মূলমন্ত্র হল, ‘ওঁ বন্দে মাতরম্, জয় জয় ভারতবর্ষম্, ঐক্যম শরণং গচ্ছামি, সত্যম শরণং গচ্ছামি, স্বরাজ্যম শরণং গচ্ছামি। মন্ত্র শুনেই বোঝা যায়, মন্দিরের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের যোগ ছিল।”

প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই মন্ত্রের সঙ্গে গলা মেলান স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ-কেউ। তেমনই এক জন সোমনাথ চক্রবর্তী জানান, একসময় এই মন্দির এলাকায় ‘ডাকাত কালী’র মন্দির হিসেবে পরিচিত ছিল বলে প্রবীণদের কাছ থেকে জেনেছেন। তিনি বলেন, “আসলে ইংরেজরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘ডাকাতের’ তকমা দিয়েছিলেন। তাঁরা দেশমাতৃকার শৃঙ্খল-মোচনের জন্য আন্দোলন করতেন। এই মন্দিরে তাঁদের যাতায়াত ছিল বলেই আমরা জেনে এসেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement