বর্ধমানে তৃণমূল অফিসে।—নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় বিধায়ক দিন কয়েক আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন। এ বার কাটোয়া কলেজে ছাত্র পরিষদ থেকে নির্বাচিত ছাত্র সংসদের ৪২ জন প্রতিনিধিই যোগ দিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদে।
সপ্তাহখানেক আগে কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। সেই সঙ্গেই বর্ধমান জেলায় তাদের গড় হিসেবে পরিচিত কাটোয়ায় কংগ্রেসে ধস নামে। রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গেই তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের বহু নেতা-কর্মী। গত পুরভোটে কাটোয়ায় কংগ্রেস ও তৃণমূল— দু’পক্ষই ১০টি করে আসন পেয়েছিল। রবীন্দ্রনাথবাবু-সহ সব কংগ্রেস কাউন্সিলরই তৃণমূলে চলে যাওয়ায় সেই পুরসভাও এখন বিরোধীশূন্য।
কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁদের ছাত্র সংগঠনের কর্মীদেরও শাসক দলের ছাত্র সংগঠনে যোগ দেওয়ার খবর নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে কানাঘুঁষো চলছিল কাটোয়া শহরে। শেষমেশ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ কাটোয়া থেকে একটি বাসে করে ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা টিএমসিপি-তে যোগ দিতে বর্ধমানে এসে পৌঁছন। ছিলেন কাটোয়া মহকুমা ছাত্র পরিষদের সভাপতি সোলেমান শেখ, কাটোয়া কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চট্টরাজ-সহ ৪২ জন সদস্য। মহকুমায় সংগঠনের আরও বেশ কিছু সদস্যও তাঁদের সঙ্গে আসেন। বর্ধমানের বীরহাটায় জেলা তৃণমূল ভবনে গিয়ে টিএমসিপি-তে যোগ দেন তাঁরা। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্র সমাজের পাশে থাকার যে বার্তা দিয়েছেন, তাতে সামিল হতেই কাটোয়া কলেজের ছাত্র সংসদের সমস্ত ছাত্র পরিষদ সদস্য আমাদের সংগঠনে যোগ দিলেন।’’
১৯৮৩ সাল থেকে একচ্ছত্র ভাবে কাটোয়া কলেজের ছাত্র সংসদ দখলে রেখেছিল ছাত্র পরিষদ। টিএমসিপি-র দাবি, রাজ্যে এমন কোনও কলেজ নেই যেখানে একটি নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠন এত দীর্ঘ সময় ধরে টানা ভোটে জিতে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। গত জানুয়ারিতে কলেজ ভোটে ৪২টি আসনের সব ক’টিতেই জেতেন ছাত্র পরিষদের প্রার্থীরা। তৃণমূলের নেতারা ময়দানে নামলেও টিএমসিপি সেখানে কোনও আসন পায়নি। এমন একটি কলেজে ছাত্র সংসদের সকলে ছাত্র পরিষদ ছেড়ে এখন টিএমসিপি-তে যোগ দেওয়ার কারণ কী? সোলেমান, জয়দেবদের বক্তব্য, ‘‘মমতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের মূল সংগঠন কংগ্রেসের কাটোয়ার নেতারা ইতিমধ্যে তৃণমূলে গিয়েছেন। এক সঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে ও কলেজের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা টিএমসিপিতে যোগ দিলাম।’’