বার বার আবহাওয়ার মন-মর্জিতে বদল। নিজস্ব চিত্র
বার বার আবহাওয়ার মন-মর্জিতে বদল। আর তার জেরেই, রবি মরসুমে চাষে সমস্যা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পশ্চিম বর্ধমানের চাষিদের একাংশ। বার বার আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে ছত্রাকজনিত রোগও দেখা যাচ্ছে বলে দাবি। কৃষি দফতর পরিস্থিতির মোকাবিলায় নানা ভাবে সতর্ক করছে চাষিদের।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় রবি মরসুমে এ বছর প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু, ১,২০০ হেক্টরে গম, ২,৪০০ হেক্টরে সর্ষে চাষ হয়েছে। কিছু জমিতে হয়েছে, ডালশস্য ও আনাজের চাষ। কিন্তু চাষিদের বড় অংশই জানাচ্ছেন, বার বার আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে, রবি চাষে, আলু থেকে সর্ষে, গম প্রায় প্রতিটি ফসলেই পোকার আক্রমণ বাড়ছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ফলে তাপমাত্রা আচমকাই বেড়ে যায়। আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ে। এর ফলে আলুর ধসা রোগ ও সর্ষে চাষে ‘মেরী পোকা’র আক্রমণ বাড়ছে। পাশাপাশি, বেশি বৃষ্টি হলে জমিতে জল দাঁড়িয়ে গোড়া পচা, কান্ড পচা রোগও বাড়ে। সে সঙ্গে নানা ছত্রাকজনিত রোগের প্রভাব বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে চিন্তিত চাষিরা। আলু চাষি হরেরাম ঘোষ, স্বাধীন মণ্ডল বলেন, “আলু গাছে এখন ধসা রোগ দেখা যাচ্ছে। এখনই পরিস্থিতির সামাল দেওয়া না গেলে ক্ষতির অঙ্ক কোথায় দাঁড়াবে, জানি না।”
তবে এ বিষয়ে কৃষি দফতরের দাবি, এই আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য চাষিদের আগেভাগেই সতর্ক করা হচ্ছে। সে জন্য কৃষকদের নিয়ে নানা ধরনের কর্মশালাও করা হচ্ছে। দফতরের পরামর্শ— বৃষ্টি হলেই জমিতে জল যাতে না দাঁড়ায়, সে দিকে নজর দিতে হবে। ধসা রোগ থেকে আলু চাষকে বাঁচাতে ম্যানকোজেব দু’গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করতে হবে। আর ধসা রোগ হলে ম্যাটালাক্সিল ও ম্যানকোজেব ১.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আর অবশ্যই ‘স্টিকার’ লাগিয়ে এই রাসায়নিক স্প্রে করার দরকার। কারণ, আলুর পাতা খুব সহজে ভিজে যায়। ফলে, তাতে রাসায়নিক ধরে না
তবে এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বৃষ্টিতে চাষিদের সেচের কাজে সুবিধা করেছে বলে মত কৃষি দফতরের। কারণ এ বার আলুর প্রায় চারটি সেচ চাষিদের দিতে হয়নি। পাশাপাশি, গম, সর্ষেতেও সেচ প্রায় দিতেই হয়নি বলে দাবি। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই আবহাওয়া সম্পর্কে চাষিদের লাগাতার সচেতন করা হচ্ছে। সবরকমের সাহায্য করা হচ্ছে চাষিদের।”