অবৈধ দখলদারদের উৎপাতে দাঁড়ানোর জায়গাটাও ঠিক মতো মেলে না। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে শৌচাগারগুলিও। দুর্গাপুরে ঝকঝকে সিটি সেন্টার এলাকার মাঝে ব্যস্ত বাসস্ট্যান্ডের এমন ছবি একেবারে বেমানান, মনে করছেন যাত্রীরা।
১৯৬৩ সালে দুর্গাপুর শহরের জন্য রাজ্য সরকার তৈরি করে ‘দুর্গাপুর রাজ্য পরিবহণ সংস্থা’। সিটি সেন্টারে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) জায়গায় গড়ে ওঠে সরকারি বাসস্ট্যান্ড। পরে দুর্গাপুর রাজ্য পরিবহণ সংস্থা বদলে যায় দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ সংস্থায়। বাড়ে পরিষেবার ব্যাপ্তিও। দুর্গাপুর থেকে কলকাতা, শিলিগুড়ি, বহরমপুর, মালদহ, আসানসোল শিল্পাঞ্চল, কৃষ্ণনগর, কল্যাণী, পুরুলিয়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাস পরিষেবা দেয় বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা। শুধু তাই নয়, এই বাসস্ট্যান্ড থেকেই ছাড়়ে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ, জামসেদপুর, টাটানগর, ওড়িশার পুরী, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি রুটের বাস ছাড়ে। বেশ কয়েকটি রুটে টিকিট কাটা যায় অনলাইনেও। এছাড়া শহরের ভিতরে বিভিন্ন রুটের প্রায় দুশোটি মিনিবাসও এই স্ট্যান্ডটিই ব্যবহার করে।
কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে যেখানে-সেখানে বসেছে গুমটি। এমনকী, দখল হয়ে থাকে যাত্রী প্রতিক্ষালয়ও। তার জেরে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। কলকাতার লেক টাউনের বাসিন্দা, বহুজাতিক সংস্থার কর্মী সৌম্যশুভ্র বসু কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক সপ্তাহে বাসে করে বাড়ি যাই। কিন্তু স্ট্যান্ডের যা অবস্থা, গা গুলিয়ে যায়।’’ যাত্রীরা জানান, এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার বাস বা মিনিবাস স্ট্যান্ডে পৌঁছলে সমস্যা আরও ভয়াবহ হয়। স্ট্যান্ডের শৌচাগারগুলির হালও তথৈবচ। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় স্ট্যান্ডে এলে নাকে রুমাল চাপা দেওয়াটাই দ্বস্তুর বলে জানান যাত্রীদের একাংশ। আবার বাস চালকদের অভিযোগ, স্ট্যান্ডের ভিতরের রাস্তার ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় যেখানে সেখানে খন্দ তৈরি হয়েছে।
এডিডিএ বছর দু’য়েক আগে মূল বাসস্ট্যান্ডটি সিটি সেন্টার থেকে সরিয়ে দু’নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা লাগোয়া এলাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা এ যাবৎ বাস্তবায়িত হয়নি। তবে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরার দাবি, ‘‘ওই স্ট্যান্ডে একটি আধুনিক যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি ও স্ট্যান্ডের উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’