ফাইল চিত্র
অবশেষে আবাসন ‘দখলমুক্ত’ করার অভিযানে নামল ইস্কো কর্তৃপক্ষ। তবে সে কাজ খুব মসৃণ ভাবে করা যাচ্ছে না বলে দাবি আধিকারিকদের। দখলমুক্ত করতে গিয়ে কর্মী, আধিকারিকদের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে হিরাপুর থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ জানালে পদক্ষেপ করা হবে। এ দিকে, এই কাজে আধিকারিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি।
বার্নপুরের ইস্কো কারখানার আবাসন দখল করে অবৈধ কারবার চালানোর অভিযোগ বহুদিনের। শ্রমিক, কর্মীদের অভিযোগ, এলাকারই কিছু দুষ্কৃতী এই কাজে লিপ্ত রয়েছে। বহিরাগতেরা ‘দখল’ করে বসবাস করায় তাঁরা আবাসন পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এ নিয়ে সরব হয়েছিল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনও। বহিরাগতদের তুলে দিয়ে দ্রুত আবাসন ‘দখলমুক্ত’ করার দাবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলনও শুরু হয়। অবশেষে গত মঙ্গলবার থেকে ধারাবাহিক অভিযান চালু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। মূলত শহর বিভাগের তত্ত্বাবধানেই শুরু হয়েছে এই কাজ। বেছে বেছে কিছু কর্মী, আধিকারিক ও সিআইএসএফ কর্মীদের নিয়ে একটি বিশেষ ফোর্স গঠন করে অভিযানে নামা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে দ্রুত তা সামাল দেওয়ার জন্য হিরাপুর থানার পুলিশকেও সঙ্গে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইস্কোর শহর বিভাগের জিএম ভাস্কর কুমার জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি ‘দখল’ করে রাখা আবাসনের তালা ভেঙে পুনর্দখল করা হয়েছে। কয়েকটি আবাসনে লোক থাকায় নোটিস দিয়ে সাত দিনের মধ্যে তা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইস্কো কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল এলাকা, বারি ময়দান, গুরুদ্বার ও ব্যাঙ্করোড লাগোয়া অঞ্চলের বহু আবাসনই ‘দখল’ করে রাখা হয়েছে। এগুলির মধ্যে কয়েকটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ, স্থানীয় দুষ্কৃতীরা চড়া ভাড়া নিয়ে এগুলিতে বহিরাগতদের থাকতে দিয়েছে। ইস্কোর জল, বিদ্যুতও চুরি করে ব্যবহার করা হচ্ছে। জিএম ভাস্করবাবুর দাবি, বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। অগত্যা বল প্রয়োগ করে বহিরাগতদের তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু দখলমুক্ত করার কাজে গিয়ে কর্মী, আধিকারিকেরা হুমকির মুখে পড়ায় থানায় একাধিক বার অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। তিনি জানান, আবাসন দখলমুক্ত করার পাশাপাশি, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইস্কোর জমি ‘দখল’ করে গজিয়ে ওঠা দোকানপাট তুলে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, বারি ময়দান, আপাররোড, স্টোশনরোড, হাসপাতাল মোড় ও বাজার এলাকায় ইস্কোর লাইসেন্সহীন দোকান গড়ে উঠেছে। এ সব ‘অবৈধ’ দোকানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শহরের নিরাপত্তার কারণেই এগুলি উচ্ছেদ করা হবে। বার্নপুর ইস্কোর ডেলি মার্কেটেও অনুমতিহীন দোকান রয়েছে বলে অভিযোগ। সেগুলিও চিহ্নিত করে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ইস্কো কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন আইএনটিইউসি’র ইস্কো শাখার সম্পাদক হরজিৎ সিংহ ও সিটুর ইস্কো শাখার সভাপতি বংশোগোপাল চৌধুরী। তাঁরা বলেন, ‘‘ইস্কোর শ্রমিক, কর্মীরা এ বার আবাসনের সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন না।’’