বর্ধমানের ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মেতে ওঠেন স্থানীয়েরা। —নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্মীপুজোয় কিঞ্চিৎ লক্ষ্মীলাভের আশা দেখছেন বর্ধমানের মৃৎশিল্পীরা। শনিবার রাত থেকেই বর্ধমানের একাধিক জায়গায় নানা আকারের প্রতিমার পসরা সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা। আশা, সোমবার থেকে লক্ষ্মীপুজোর বাজার জমজমাট হয়ে উঠবে।
করোনার আবহে গত বছর সে ভাবে বিক্রিবাটা হয়নি বর্ধমানের প্রতিমাশিল্পীদের। তবে চলতি বছর পরিস্থিতি সামান্য হলেও শুধরেছে। ফলে বুধবার লক্ষ্মীপুজোর আগে লাভের আশায় রবিবার থেকেই বর্ধমানের কার্জন গেট, বীরহাটা, নীলপুর এবং পুলিশ লাইনের সামনে ভিড় জমিয়েছেন প্রতিমাশিল্পীরা। সাজের ঠাকুর থেকে খড়ের কাঠামোর নানা মাপের প্রতিমা নিয়ে এসেছেন তাঁরা। বর্ধমানের অন্যতম নামী মৃৎশিল্পী সিদ্ধার্থ পাল বলেন, ‘‘অতিমারির আবহে গত বছর বেশ কম সংখ্যায় প্রতিমা বানিয়েছিলাম আমরা। তবে সেটুকুও বিক্রি হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ বছর বহু সংখ্যক প্রতিমা গ়ড়েছি। তার দামও ভালই পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’ বহু মৃৎশিল্পী আবার শেষবেলার কাজে ব্যস্ত। সুবীর পাল নামে আর এক প্রতিমাশিল্পী বলেন, ‘‘রবিবারও বহু মূর্তির শেষ পর্বের কাজ চলছে। আগামিকাল (সোমবার) থেকে আগামী তিন দিন বাজার জমে উঠবে বলেই আশা করছি।’’
শেষবেলার কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানের ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মেতে ওঠেন স্থানীয়েরা। তবে উদ্বাস্তু অঞ্চলে এই পুজোর চলন বেশি। চলতি বছর জেলায় একশো টাকা থেকে সাজের ঠাকুরের দাম শুরু। খড়ের প্রতিমার দর তিন হাজার টাকা অবধি হতে পারে। যদিও প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বহু মৃৎশিল্পী। ফলে ইচ্ছে থাকলেও প্রতিমার দাম সে ভাবে বাড়াতে পারেননি। মৃৎশিল্পীদের অনেকে জানিয়েছেন, প্রতিমা গড়ার জন্য এক লরি মাটির দাম গত বছর ন’হাজার টাকা থাকলেও চলতি বছর তা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার টাকা। তবু প্রতিমার দাম বাড়াতে পারছেন না মৃৎশিল্পীরা। স্বাভাবিক ভাবেই এতে সমস্যায় পড়েছেন অনেকে। বর্ধমানের পালপাড়ার মৃৎশিল্পী চন্দন পাল বলেন, ‘‘প্রতিমা গড়ার জন্য এ বার ভালই বায়না এসেছে। কিন্তু প্রতিমা তৈরির খরচ এতটাই বেড়েছে যে আমরা চাইলেও দাম বাড়াতে পারছি না।’’