জল জমে রয়েছে কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের মাঠে। —নিজস্ব চিত্র।
কোথাও হস্তশিল্পের বিপণি, কোথাও বা আবার অ্যাডভেঞ্চার প্রদর্শনীর জন্য তৈরি করা স্টেজ — সবই জলে থইথই করছে। আর এর জেরে কাটোয়া মেলায় যোগ দিতে আসা বিক্রেতারা ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বৃষ্টির জন্য বাড়ি থেকে বেরনো যাচ্ছে না বলে মন খারাপ কাটোয়ার খুদেদেরও।
১৯ মে থেকে কাটোয়ার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের মাঠে মেলার আসর বসেছে। মেলার আয়োজক সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, এ বার মোট ১০০টি স্টল ও প্রায় ২৫টি বিভিন্ন ধরনের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় যোগ দিয়েছেন প্রায় ৪০০ বিক্রেতা।
রবিবার, মেলা প্রঙ্গনে ঢুকে দেখা গেল প্রায় সমস্ত স্টলগুলিই জলে ডুবে গিয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রদর্শনীর তাঁবুতে জল ঢুকে যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে গিয়েছ। খাবার, কাপড় বা হস্তশিল্পের স্টলগুলির অধিকাংশই জলে ডুবে গিয়েছে। গত কয়েকদিনের তুমুল বৃষ্টির জেরেই এমনটা হয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। ৫ জুলাই পর্যন্ত মেলা হওয়ার কথা। তবে এখন পরিস্থিতির ফেরে আপাতত মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মারণকূপের খেলা দেখাতে আসা মহম্মদ সেলিম জানান, দিন কয়েক চলার পরেই আর খেলা দেখানো যাচ্ছে না। মেলায় যোগ দিতে আসা মালদহের মিঠুন সরকার, কৃষ্ণনগরের গোবিন্দ সরকাররা বলেন, ‘‘মেলাকে কেন্দ্র করেই আমাদের রুজি। কিন্তু আচমকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’’ আক্ষোপ যাচ্ছে না মেলার আয়োজকদেরও। অন্যতম আয়োজক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার বেশ বড় করে মেলার আসর বসেছিল। কিন্তু প্রকৃতির খামখেয়ালিতে সবারই লোকসান হয়ে গেল।’’
স্কুলের মাঠ জলে ভেসে যাওয়ায় আপাতত স্কুল ঘরেই থাকতে হচ্ছে তাঁদের। প্রধান শিক্ষক সুধীন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ওঁরা কাটোয়ার অতিথি। মানবিক কারণেই স্কুলের কয়েকটি ঘর খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওওয়া হয়েছে।’’
তবে শুধু বিক্রেতাদের ক্ষতিই নয়, মেলায় যোগ দিতে না পারার আক্ষেপ যাচ্ছে না কাটোয়ার খুদেদেরও। স্কুল ফিরতি পথে বা বিকেলে বাবা-মা’র সঙ্গে মেলায় ঢুঁ দেওয়াটা রীতিমতো দস্তুর হয়ে দাঁড়ায় বছরের এই ক’টা দিন। শুভজিৎ দাস, সোমা পাল, অত্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জনা কয়েক খুদে জানায়, ‘‘মেলায় না যেতে পেরে খুব খারাপ লাগছে। প্রিয় খেলাগুলো যে দেখা হচ্ছে না।’’