কালনায় মৃত খেতমজুর

খেতের কাজের ফাঁকে ছায়ায় জিরোন, পরামর্শ চিকিৎসকের

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। সঙ্গে আদ্রর্তা। দেখা নেই ঝড়বৃষ্টির। এই পরিস্থিতিতে মাঠে কাজ করতে করতে মৃত্যু হয়েছে সঞ্জয় মুর্মু নামে বছর সাতাশের এক খেতমজুরের। চিকিৎসকের প্রাথমিক অনুমান, গরমে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকায় সানস্ট্রোক হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১০
Share:

মাঠে কাজের ফাঁকে। কাটোয়ায় অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। সঙ্গে আদ্রর্তা। দেখা নেই ঝড়বৃষ্টির। এই পরিস্থিতিতে মাঠে কাজ করতে করতে মৃত্যু হয়েছে সঞ্জয় মুর্মু নামে বছর সাতাশের এক খেতমজুরের। চিকিৎসকের প্রাথমিক অনুমান, গরমে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকায় সানস্ট্রোক হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

চাষিরা জানান, সবচেয়ে মুশকিল হয়েছে মাঠে কাজ করা। বেলা ১০টা বাজলেই বেশির ভাগ খেতমজুর আর কাজ করতে চাইছেন না। সোমবার সঞ্জয়ও মাঠে কাজ করতে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের পাতাইগাছি গ্রামের ওই যুবক বাড়ির কাছেই একটি ধান খেতে কাজ করতে যান। বিকেল পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তাঁর খোঁজ শুরু হয়ে যায়। পরে ওই খেতেই এক ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। পাতাইগাছির বাসিন্দা গোপন মুর্মু, বাপি মুর্মুরা বলেন, ‘‘বেলা দশটার পর আর মাঠে থাকা যাচ্ছে না। ঘামের সঙ্গে অস্বস্তি শুরু হয়ে যাচ্ছে।’’ রোদ গরম সহ্য করতে না পেরেই সঞ্জয় মারা গিয়েছেন বলে‌ও তাঁদের দাবি। মঙ্গলবার মৃতদেহটি ময়না-তদন্ত হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘তীব্র রোদ গরমে ওই যুবক মাঠে কাজ করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে তাঁর সানস্ট্রোকেই মৃত্যু হয়েছে।’’

গরমে প্রচুর মানুষ পেটের অসুখে ভুগছেন বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। কালনা শহরের বাসিন্দা প্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে থাকলে তো আর চলে না। সকাল ন’টা না বাজতেই শুরু হচ্ছে রোদের তেজ। বাইরে বেরোলেই গা পুড়ে যাচ্ছে।’’ বেশি সময় বাইরে ঘুরলে মাথা যন্ত্রণা, বমির মতো উপসর্গও দেখা দিচ্ছে অনেকের। নাদনঘাটের বাসিন্দা খায়রুল শেখের কথায়, ‘‘ছাতা, টুপি,গামছা ব্যবহার করেও অস্বস্তি এড়ানো যাচ্ছে না।’’ ৪২ থেকে ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এমন পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক নয় বলে জানান চিকিৎসকেরাও।

Advertisement

তাঁদের পরামর্শ, নিজেদের রক্ষা করতে এই সময় সতর্ক থাকতে হবে। রোদে বেরোলে সঙ্গে রাখতে হবে ওআরএস, গ্লুকোজ এবং পর্যাপ্ত পানীয় জল। চাষের জমি অথবা ছাউনি না থাকা এলাকায় একটানা কাজ করা যাবে না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়ারও পরার্শ দিচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া ছাতা, চশমা ব্যহার, মোটরবাইক চালালে সুতির জামা পড়ে আলাদা সুতির কাপড়ে শরীর ঢেকে নেওয়া ভাল। এড়িয়ে যেতে হবে প্লাস্টিকের জুতোও। এ ছাড়াও বেশি তেল মশলাযুক্ত খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘এই সময় ডাল, ভাত, সব্জি, ছোট মাছের মতো সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। বেশি তেল-মশলা মানেই পেটের অসুখ ডেকে আনা।’’ দিনে ছয় থেকে সাত লিটার জল পান করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement