প্রতীকী ছবি।
বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে জঙ্গল থেকে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে কুলটিতে। পুলিশের কাছে পরিবারের অভিযোগ, রাজারাম বাউড়ি (২৬) নামে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নিয়ামতপুরের বেলরুইয়ের ঘটনা। ‘নিহতের’ বাড়ি নিয়ামতপুরের ভাঁড়রা গ্রামে।
এ দিন ভোরে এলাকাবাসীর একাংশ বেলরুই লাগোয়া একটি জঙ্গলের মধ্যে গাছের ডাল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাজারামের দেহটি দেখেন। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ভিড় জমে। গ্রামে দাদা ও দিদির সঙ্গে থাকতেন ওই যুবক। ঘটনাস্থলে এসে রাজারামের দিদি থান্ডি বাউড়ি জানান, তাঁর ভাই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে নানা ফাইফরমাস খেটে সামান্য রোজগার করতেন। অনেক সময়েই রাত করে বাড়ি ফিরতেন। তিনি পুলিশকে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজারাম বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তবে রাতে বাড়ি ফেরেনি।
এ দিকে, পুলিশের কাছে নিহতের দিদি জানান, কয়েকদিন ধরে রাজারামের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের ঝামেলা বেধেছিল। বুধবার দুপুরে সীতারামপুরে রেললাইনের ধারে নিয়ে গিয়ে ওই যুবকেরা রাজারামকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। থান্ডিদেবীর অভিযোগ, ‘‘ওই যুবকেরাই ভাইকে মেরে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে।’’
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধারের চেষ্টা করতেই বিক্ষোভ শুরু করেন নিহতের পরিজন ও এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁদের দাবি, গাছের যে ডাল থেকে দেহটি ঝুলছিল, সেটি মাটি থেকে খুব একটা উঁচুতে ছিল না। এমনকি, দেহের পায়ের পাতা মাটিতে লেগেছিল বলেও দাবি। এলাকাবাসী পুলিশ-কুকুর এনে তদন্ত করানোর দাবি জানাতে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি বাচ্চু রায়ের অভিযোগ, ‘‘ঠিক দু’বছর আগে একই জায়গা থেকে স্থানীয় একজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সে বারও প্রাথমিক ভাবে সেটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও পুলিশ পরে প্রমাণ করে তা খুন। এ ক্ষেত্রেও আমাদের দাবি, পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করুক।’’
প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে, পুলিশ কুকুর আনা হয় ঘটনাস্থলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুকুরটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দূরে একটি পুকুরের পাড় পর্যন্ত গিয়ে থমকে যায়। সকাল ১০টা নাগাদ দেহটি উদ্ধার করে, আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’