বিজয়নগর মোড়ে গুলি চলে বলে দাবি। নিজস্ব চিত্র।
দোকানের সামনে রাস্তায় টোটো দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার জামুড়িয়া থেকে হরিপুর যাওয়ার রাস্তায়, বিজয়নগর মোড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়নগর মোড়ে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ের পাশে বেশ কিছু হকার নানা সামগ্রী বিক্রি করেন। তেমনই এক জন হকার, পেশায় ছাতু বিক্রেতা নিশীথ পাল পুলিশকে জানিয়েছেন, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জামুড়িয়ার জামবাদের বাসিন্দা, টোটো চালক পরেশ ঘোষ দলীয় কার্যালয় যাওয়ার রাস্তা আটকে, তাঁর দোকানের সামনে টোটো দাঁড় করান। নিশীথ তাঁকে টোটো সরাতে বলেন। তাতে তাঁর সঙ্গে পরেশের বচসা বাধে।
এলাকাবাসী জানান, তাঁদের কয়েক জনের হস্তক্ষেপে, পরেশ সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে পরেশ বিজয়নগর গ্রাম থেকে সাগর পালকে ডেকে নিয়ে আসেন। এর পরে, স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিষয়টির সমাধান হয়ে যায়। সেখান থেকে পরেশ ও সাগর চলে যান। কিন্তু অভিযোগ, যাওয়ার আগে নিশীথ ও তাঁর ছেলেকে খুনের হুমকি দেন পরেশ।
অভিযোগ, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পরেশ, সাগর-সহ কয়েক জন নিশীথের ছাতুর দোকানে সামনে আসেন। নিশীথের ছেলে শিবনাথের অভিযোগ, “ওই সময়ে দোকানে একাই ছিলাম। পরেশ আমাকে তাক করে দু’টি গুলি ছোড়ে। একটি দোকানের সামগ্রীতে এবং অন্যটি আমার কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।” এলাকাবাসী অভিযুক্তদের ধাওয়া করলে, তাঁরা এলাকা ছাড়েন।
এ দিকে, ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তি মণ্ডলের দাবি, “এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোটা অত্যন্ত জরুরি। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, মূল অভিযুক্ত পরেশ এলাকাছাড়া। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সন্তোষ সিংহের অভিযোগ, “আসানসোল খনি শিল্পাঞ্চল দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছে। কয়লা মাফিয়া থেকে রাজনৈতিক নেতার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তৃণমূল ও দুষ্কৃতী সমার্থক, এটা প্রমাণিত হচ্ছে। এ দিনের ঘটনাও আসলে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই।” যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর সংযোজন: “দলীয় কার্যালয়ের সামনে এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই। কোনও দোকানদারের সঙ্গে টোটো চালকের অশান্তির বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। দুর্বৃত্তদের দমন করতে পুলিশ সব সময় পদক্ষেপ করে।”