উদ্ধার হওয়া গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
নম্বর প্লেট বদলে ভিন্ রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল চোরাই গাড়ি। নম্বর প্লেটের ভাষা বদলে তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় দুষ্কৃতী। গাড়িটিও উদ্ধার হয় সেখান থেকেই।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা থেকে অনলাইনে গাড়ি ভাড়া করে যাত্রী সেজে গলসি এলাকায় চালককে মারধর করে এই গাড়িটিই ছিনতাই করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার চালক পিয়ারিলাল গুপ্ত গলসি থানায় আসেন। তাঁর মোবাইল ও গাড়ির কাগজপত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। পিয়ারিলাল বলেন, ‘‘যে ভাবে পুলিশ আমার গাড়িটা উদ্ধার করল তাতে পুলিশের উপরে আমার আস্থা অনেক বেড়ে গেল। গলসি থানাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।’’
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি ভ্রমণ সংস্থাকে ফোন করে দুর্গাপুরে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করেছিলেন অভিযুক্তরা। সংস্থাটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়। রাত ১২টা নাগাদ কলকাতার টেগোর পার্ক এলাকায় গাড়ি নিয়ে যান কসবা থানার কেএন সেন রোডের বাসিন্দা পিয়ারিলাল। যাত্রীদের তুলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধরে গাড়ি যখন দুর্গাপুরের দিকে যাচ্ছিল সেই সময়ে গলসির পুরসা এলাকায় একটি হোটেলের কাছাকাছি এক যাত্রী বমি করতে শুরু করেন। গাড়ি থামাতে বলেন তিনি। চালক গাড়ি দাঁড় করান। গাড়ি থেকে দু’জন নামেন। অভিযোগ, কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে চালকের কাছ থেকে গাড়ির চাবি কেড়ে নেন তাঁরা। আর এক জন বন্দুক কপালে ঠেকিয়ে চালককে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। তারপরেই গাড়ি নিয়ে চম্পট দেন তাঁরা। গাড়িতে ছিল পিয়ারিলালের মোবাইল ও গাড়ির কাগজপত্র। ভোরে পিয়ারিলালকে রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, তদন্তে নেমে প্রভাত কুমার নামে এক দুষ্কৃতীর সন্ধান মেলে। দু’দিন আগে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগে আসানসোল স্টেশন থেকে বিহারের বৈশালির বাসিন্দা প্রভাতকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। সুরজ কুমার নামে আর এক জনের নামও উঠে আসে জেরায়। পুলিশ জানতে পারে, সুরজের কাছে গাড়িটি রাখা রয়েছে। তল্লাশি শুরু হয়। বিহারের মুজাফ্ফরপুরের সরাইয়া থেকে সুরজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গলসি থানার এক পুলিশ কর্তার দাবি, গাড়ি ছিনতাইয়ের চার জন যুক্ত। তাঁদের কাছ থেকে গাড়িটিকে নিজের হেফাজতে রেখেছিল সুরজ। ছিনতাই হওয়া ও উদ্ধার হওয়া গাড়িটির নম্বর এক থাকলেও ইংরেজি বদলে হিন্দিতে প্লেট তৈরি করে লাগানো হয়। সুরজকে ধরার পরে বাকি তিন জনকে ধরতে বিহারের বৈশালীর সেখপুরায় হানা দেয় পুলিশ। তবে তাঁদের ধরা যায়নি। পিয়ারিলালের মোবাইল ও গাড়ির কাগজপত্র মেলে সেখানে।