অন্ধকার ডিসিএল টাউনশিপ। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সময়ে বিল মিটিয়ে দেওয়ায় কোয়ার্টারে সংযোগ আছে। কিন্তু পথবাতির বিল মেটানো নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে দুর্গাপুরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ‘দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড’ (ডিসিএল) কলোনিতে। যার জেরে সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় ডিসিএল কলোনির রাস্তাঘাট। একটিও আলো জ্বলে না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও, সদর্থক সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের। অবিলম্বে এই সমস্যা মেটানোর জন্য তাঁরা চিঠি দিয়েছেন কোকআভেন থানায়। প্রশ্ন উঠেছে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও। পুলিশ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর সংলগ্ন এলাকায় ডিসিএল গড়ে ওঠে ১৯৬৩-তে। ১৯৬৮-তে শুরু হয় বাণিজ্যিক উৎপাদন। কর্মীদের জন্য গড়ে তোলা হয় টাউনশিপ। ২০১৬-য় রাজ্য সরকার কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরে থেকেই ডামাডোল শুরু হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ২০১৯-এর ৩০ ডিসেম্বর দূষণ ছড়ানো ও নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরামর্শে রাজ্যের শিল্প পুনর্গঠন দফতর এখানকার উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তার পরে থেকে আর উৎপাদন চালু হয়নি। টাউনশিপের অবস্থাও পড়তির দিকে।
টাউনশিপের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগে সরাসরি ডিসিএল কর্তৃপক্ষ টাউনশিপের কোয়ার্টার ও পথবাতির জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করতেন। পরবর্তীতে সেই ব্যবস্থা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। সে জন্য পুরো টাউনশিপের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে নতুন করে সংযোগ দেওয়া হয়। তাঁদের অভিযোগ, নতুন ব্যবস্থার সময়ে সব কোয়ার্টারে সংযোগ দেওয়া হলেও, পথবাতিতে সংযোগ দেওয়া হয়নি। কাজল রাউথ, অশোকা ঘোষেরা বলেন, “রাতে টাউনশিপের চারদিক আঁধারে ডুবে যায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে যাতায়াতে সমস্যা হয়। কারণ, ঝোপঝাড়, সাপের উপদ্রব বেড়েছে। তা ছাড়া অসমাজিক কাজকর্মের বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কাও রয়েছে।” সোমেশ ঘাঁটি, শৈবাল মজুমদারেরা বলেন, “এই পরিস্থিতিতে নিতান্ত দায়ে না পড়লে, কেউ সন্ধ্যার পরে ঘরের বাইরে যান না। প্রত্যন্ত গ্রামের থেকেও খারাপ অবস্থা আমাদের টাউনশিপের।” তাঁরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানিয়েও লাভ না হওয়ায়, সম্প্রতি চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন করা হয়েছে থানায়।
এ দিকে, বিদ্যুৎ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কোয়ার্টারের বিল মিটিয়ে দেন বাসিন্দারা। কিন্তু রাস্তার আলোর বিল কে মেটাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও, পুর-এলাকার মধ্যে অবস্থিত একটি টাউনশিপে পথবাতি না জ্বলায় বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। এ প্রসঙ্গে পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। প্রশাসক বোর্ডের সভায় আলোচনার পরে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”