ধৃত: আদালতের পথে ধৃত রঞ্জিত সিংহ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
সেনাবাহিনীর চাকরিতে পরীক্ষার্থীদের ভুয়ো শংসাপত্র ও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রঞ্জিত সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া একটি লজ থেকে রঞ্জিতকে পাকড়াও করে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে গত ৩ মে থেকে র্যালির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বহরমপুর কার্যালয়ের জন্য কনস্টেবল পদের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া— এই চার জেলার যুবকেরা পরীক্ষা দিচ্ছেন। বুধবার, প্রথম দিনেই বেশ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর শংসাপত্র দেখে সন্দেহ হয় সেনাবাহিনীর আধিকারিকদের। ওই চাকরিপ্রার্থীদের এই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র থাকলেও তাঁদের ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা বলে অনুমান করেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা ও পুলিশে অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে মোট ২৪ জন চাকরিপ্রার্থীকে আটক করে দুর্গাপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁদেরকে জেরা করে পুলিশ রঞ্জিতের হদিস পায়। পুলিশের দাবি, আটক চাকরিপ্রার্থীদের জেরা করে আরও জানা যায়, রঞ্জিতের বাড়ি বিহারের ছাপড়ার দৌলতগঞ্জে। এ ছাড়া তাঁদের থেকেই রঞ্জিতের মোবাইল নম্বরও মেলে। ওই নম্বরের সূত্র ধরে রঞ্জিতের খোঁজ মেলে।
পুলিশের দাবি, ২মে রাত থেকে ওই লজে আস্তানা গেড়েছিল রঞ্জিত-সহ বেশ কয়েক জন। তবে রঞ্জিতের সঙ্গীরা চম্পট দিয়েছে। পুলিশের দাবি, বেশ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী তাঁদের জানিয়েছেন, ‘‘রঞ্জিত বলেছে, চার-পাঁচ লাখ দিয়ে দাও। চাকরি হয়ে যাবে।’’ অভিযোগ, সেই মতো কয়েক জনের কাছ থেকে টাকাও হাতিয়েছিল রঞ্জিত।
তবে কোথা থেকে ও কী ভাবে এই সমস্ত জাল নথি তৈরি করত রঞ্জিত, তার এখনও খোঁজ মেলেনি বলে পুলিশ জানায়। তবে আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই ২৪ জনের মধ্যে ২২ জনের শংসাপত্রে আসানসোলের মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিকের সই রয়েছে। অথচ সেই আধিকারিক ২০১২ সালে অবসর নিয়েছেন।’’
শুক্রবার রঞ্জিতকে আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আটক ২৪ জন চাকরিপ্রার্থীকে শুক্রবার ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।