মতুয়াদের অনুষ্ঠানে মমতাবালা ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র।
ভোট বৈতরণী পার হতে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পূর্ব বর্ধমানের পাল্লা ক্যাম্পে মতুয়াদের এক অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ তোলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর অভিযোগ, অমিত শাহ মতুয়াদের অপমান করেছেন। উল্টো দিকে মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি পালন করছেন। তাঁর দাবি, মতুয়া ভোট এখন তৃণমূল বিজেপি-তে আড়াআড়ি বিভক্ত।
মমতার প্রশ্ন, ‘‘অমিত শাহ বলে গিয়েছেন, করোনা ভ্যাকসিনের পর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নাগরিকত্বের সঙ্গে ভ্যাকসিনের কী সম্পর্ক? আসলে উনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, “মতুয়াদের বলব ২০১৯-এ যে ভুল করেছেন তা আর করবেন না। আমরা নাগরিকত্ব চাই। কিন্তু তার জন্য আবেদন করতে হবে কেন? আমরা তো ভারতের নাগরিকই।”
পাল্লা ক্যাম্পের পর মেমারি পারিজাতনগরের হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মন্দিরের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগম। মতুয়া সম্প্রদায়ের ‘বড়মা’ বছর দেড়েক আগে এই এলাকায় এসে মতুয়াদের জন্য বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় নার্গিসকে সবার সামনে তীব্র ভর্ৎসনা করেন মমতা। প্রতিশ্রুতি পালন না হওয়ার দায় নার্গিস কার্যত অন্য নেতাদের উপর চাপাতে চান। এর পরেই মতুয়া ভক্তদের রোষের মুখে পড়েন নার্গিস। শেষে এক প্রকার চাপে পড়ে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যান তিনি। এর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসরে নামেন মেমারি পুরসভার প্রশাসক স্বপন বিষয়ী ও সহ-প্রশাসক সুপ্রিয় সামন্ত। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি অরাজনৈতিক মঞ্চে কার্যত রাজনৈতিক রং দেওয়া হল।
শুক্রবার পারিজাত নগর থেকে রসুলপুর পর্যন্ত রোড শো করেন মমতাবালা। এর পর মহেশডাঙা ক্যাম্প এলাকায় একটি জনসভা করেন। সেখানে মমতাবালা দাবি করেন, ‘‘বাংলায় মতুয়ারা ভাল আছেন। মুখ্যমন্ত্রী কথা রেখেছেন, হরিচাঁদের জন্মদিনে ছুটি দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্টেডিয়াম হয়েছে গুরুদের নামে। বোর্ড হয়েছে মতুয়াদের জন্য। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হরিচাঁদের মূর্তিতে প্রণামও করেননি। ওখানে হরিবোল না বলে জয় শ্রীরাম ধ্বনি উঠেছে। মতুয়াদের বলব এই অপমান মানবেন না।’’