(বাঁ দিকে) মদন মিত্র এবং বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রবিবার দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায় সভা করেছিল তৃণমূল। তাতে জেলার প্রায় তৃণমূল নেতাদের দেখা গেলেও, দেখা মেলেনি প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের। বিশ্বনাথের সরাসরি অভিযোগ, তাঁকে ওই সভায় কেউ যেতে বলেননি। এ দিকে, সোমবার দুর্গাপুরে এসে বিষয়টি উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। এই বিষয়টি সামনে আসার পরে, এলাকায় তৃণমূলের কোন্দলই প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন অনেকে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের দুর্গাপুর ১, ২, ৩ নম্বর ব্লক এবং কাঁকসা ব্লকের তরফে ওই সভাটির আয়োজন করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী না কি বিশ্বনাথকে ফোনও করেছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর নরেন্দ্রনাথ জানতে চান, তিনি সভায় আসবেন কি না। বিশ্বনাথ জানান, তাঁকে উদ্যোক্তাদের কেউ ফোন করেননি।
এ বিষয়ে সোমবার বিশ্বনাথ বলেন, “জেলা সভাপতি আমাকে জানিয়েছিলেন, ব্লক নেতৃত্ব আমাকে ফোন করে সভায় যাওয়ার জন্য বলবেন। কিন্তু ফোন আসেনি। আমি মনে করি, আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদা সব থেকে বড় সম্পদ। বিনা নিমন্ত্রণে কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে যায়?”
দলীয় সূত্রে খবর, বিশ্বনাথকে ফোন করার কথা ছিল দলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি ভীমসেন মণ্ডলের। ভীমসেন অবশ্য বলেন, “সভাটি দলের কর্মসূচি ছিল। জেলা সভাপতির নির্দেশে চারটি ব্লক মিলে এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়েছে। জেলা সভাপতি ওঁকে নিজে ফোন করেছিলেন। সেই নির্দেশ উনি মানবেন কি না, সেটা তাঁর ব্যাপার।”
এ দিকে, এ দিন বিকেলেই দুর্গাপুরে এসেছিলেন বিধায়ক মদন মিত্র। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মদন বলেন, “বিশ্বনাথ পাড়িয়াল দলের গুরুত্বপূর্ণ পুরনো কর্মী। আমি যখন যুব কংগ্রেসের সভাপতি ছিলাম, তখন উনি অনেক অত্যাচার সহ্য করেছেন। কেন তাঁকে ডাকা হয়নি, তা জানি না। তবে এখানে বিশ্বনাথকে বাদ দিয়ে ভাবাটা ঠিক হবে না।”
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “তৃণমূল দলটাই কোন্দলে পূর্ণ। এমন নানা ঘটনা আগামী দিনে প্রকাশ্যে আসবে।” বিজেপির বক্তব্যে আমল দিচ্ছেন না তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর সংযোজন: “একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিশ্বনাথ পাড়িয়াল সুবক্তা এবং দলের সম্পদ। আমি ওঁর কাছে গিয়ে সব ঠিক করে নেব।”