ডিসেরগড়ের এই জায়গা ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
‘খেলার মাঠ’ দখল করে ইটভাটা তৈরির অভিযোগ উঠল সাবেক কুলটি পুরসভার প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর ত্রিলোচন মাজির বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান। রবিবার ডিসেরগড়ের নোনিয়া বস্তি লাগোয়া বেলগাড়ি অঞ্চলের ঘটনা। গোলমালের খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ। দু’পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তারা।
এই ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য। ‘বেনিয়ম’ আটকাতে সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ি ও কুলটি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয় বলে দাবি বাসিন্দাদের। যদিও ওই জমিটি নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তি বলে দাবি করেছেন ত্রিলোচনবাবু। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘এটি কখনওই খেলার মাঠ ছিল না। জমির দালালেরা চক্রান্ত করে তা দখল করতে চাইছে।’’
এলাকাটি আসানসোল পুরসভার ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় ৭০ বছরের পুরোনো এই ‘মাঠে’ তাঁরা নিয়মিত খেলাধুলো করেন। স্থানীয় একটি আদিবাসী ফুটবল দলও এই মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করে। এ ছাড়া, একাধিক সংগঠনের উদ্যোগে এখানে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আসরও বসে। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার দুপুরে দেখা যায়, ওই ‘মাঠে’ যন্ত্র নামিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। মাটি কাটার কাজে যুক্ত লোকজনকে কয়েকজন বাসিন্দা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, সেখানে একটি ইটভাটা তৈরি হবে। তাই ‘মাঠ’ বাঁচাতে তাঁরা একজোট বিক্ষোভ শুরু করেন।
ডিসেরগড় অঞ্চলের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ সমীর মাজি বলেন, ‘‘খেলার মাঠ অবশ্যই রক্ষা করা উচিত।’’ কাউন্সিলর অভিজিবাবুর দাবি, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি আমাকে জানানোর পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মহকুমাশাসক (আসানসোল)-এর কাছে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। খেলার মাঠ দখল করে ইটভাটা তৈরির উদ্যোগ রোখা হবে।’’
এ দিকে, ত্রিলোচনবাবু দাবি করেছেন, ‘‘কোনও কালে এটি খেলার মাঠ ছিল না। আজও সেখানে খেলাধুলো হয় না। এই জমি আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করব।’’ তিনি জানান, ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। তাই স্থানীয় এক ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে এই জমি ব্যবহার করার জন্য ‘লিজ’ দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। ইটভাটা তৈরির অভিযোগ প্রসঙ্গে ত্রিলোচনবাবু বলেন, ‘‘ভাটা তৈরির প্রয়োজনীয় অনুমতি মেলার পরে দেখা যাবে।’’
এ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুমতি ছাড়া, ইটভাটা তৈরির কোনও প্রশ্নই নেই। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের অভিযোগ লিখিত ভাবে আমার কাছে পাঠালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’