বারান্দা গ্রামের ওই বাড়িতে ফরেন্সিক দলের প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র
ছোট সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করে বিস্ফোরণ ঘটেছে বাড়িতে, কেতুগ্রামের বারান্দা গ্রামে ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে জানালেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
শনিবার রাতে ওই গ্রামে বিকট শব্দ করে একটি বাড়ির দরজার পাল্লা ভেঙে ছিটকে গিয়ে লাগোয়া ধানের গোলায় পড়ে। কেঁপে ওঠে পাড়া। অল্পবিস্তর জখম হন ওই ঘরে থাকা এক বৃদ্ধা। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে পুলিশ। কিন্তু বোমার চিহ্ন মেলেনি বলে জানান তদন্তকারীরা। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, ধন্দে পড়েন গ্রামবাসী থেকে পুলিশ, সকলেই। ঘটনার সূত্র পেতে ফরেন্সিক বিভাগকে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার কলকাতা ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে। ঘণ্টাখানেক ধরে তদন্ত করার পরে তাঁরা জানান, একটি ছোট সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করেই এই ঘটনা ঘটেছে। তদন্তকারী দলটি ওই বাড়ি থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। বাজেয়াপ্ত করে গ্যাস সিলিন্ডারটিও।
বারান্দা গ্রামের উত্তরপাড়ায় দিনমজুর শৈলেন মাঝির বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। পাকা বাড়িতে পাশাপাশি দু’টি ঘর। শৈলেনবাবু জানান, একটিতে তিনি ছিলেন। পাশের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন তাঁর মা পদ্ম মাঝি। ওই ঘরেই রাতে বিকট শব্দ হয়। দরজার দু’টি পাল্লা ভেঙে যায়। একটি পাল্লা ছিটকে গিয়ে উঠোনে ধানের গোলায় ঢুকে যায়। বিকট শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় পড়শিদেরও। তাঁদের দাবি, গোড়ায় মনে হয়েছিল, ভূমিকম্প বা বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রাখে।
সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ দুই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দেবাশিস সাহা ও নিধির কর বারান্দা গ্রামে আসেন। সেখানে এসডিপিও (কাটোয়া) ত্রিদিব সরকার ও কেতুগ্রামের আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ছিল। তদন্তকারীরা বাড়ির জিনিসপত্র খতিয়ে দেখেন। ধানের গোলা থেকে ভাঙা পাল্লা বার করা হয়। ঘরে থাকা একটি ছোট গ্যাস সিলিন্ডারে নজর পড়ে বিশেষজ্ঞদের। পরীক্ষার পরে তদন্তকারীরা জানান, সেটির কারণেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞ দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে বদ্ধ ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল। ছোট ঘরে গ্যাসের তীব্রতা বেড়ে যায়। তার জেরেই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। তবে বাড়ি থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’’ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘ফরেন্সিক দল তদন্ত করেছেন। এখনও রির্পোট হাতে পাইনি।’’
পদ্মদেবী এ দিন বলেন, ‘‘বরাত জোরে আমরা বেঁচে গিয়েছি।’’