হাঁড়ি চড়ল না গ্রামে

এ দিনও এলাকাবাসীর একাংশ অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবি জানান। রাজু ধাড়া, সুশান্ত বাগদি ও রতন ঘোষেরা বলেন, “অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক যাতায়াত বন্ধ না হলে ফের দুর্ঘটনা ঘটবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৩৪
Share:

সুনসান শিকারপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা। নিজস্ব চিত্র।

দু’টি এলাকা, গলসির বন্দুটিয়া এবং শিকারপুর। দূরত্ব মেরেকেটে দশ কিলোমিটার। বন্দুটিয়ার ছেলের সপরিবার শিকারপুরে মৃত্যুর ঘটনায় এক গ্রামে যখন আক্ষেপ করছেন গ্রামবাসী। ঘটনাস্থল শিকারপুরে তখন পুলিশের ভারী বুটের শব্দ। অনেক বাড়িতেই হয়নি রান্না।

Advertisement

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাজার বন্ধ। রাস্তাঘাট সুনসান। এই এলাকাতেই সুচিত্রা মালিক (৫৫)-সহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার গভীর রাতে। সুচিত্রাদেবীর দেহ এ দিন দুপুরে গ্রামে পৌঁছয়। সেখানে ভিড় করেছিলেন পড়শি কৃষ্ণ ধাড়া, নমিতা বাগদিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘শুধু ওই পরিবারটার কথা মনে পড়ছে। হেঁশেলের দিকে যেতেই পারিনি।’’ কিন্তু বৃহস্পতিবারও বালির ট্রাকে চাপা পড়া ওই বাড়িটির কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় কয়েকজন এলাকাবাসীকে।

এ দিনও এলাকাবাসীর একাংশ অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবি জানান। রাজু ধাড়া, সুশান্ত বাগদি ও রতন ঘোষেরা বলেন, “অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক যাতায়াত বন্ধ না হলে ফের দুর্ঘটনা ঘটবে।’’

Advertisement

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শশীকুমার চৌধুরী বলেন, “শিকারপুরের আটটি বালি খাদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক চলাচল বন্ধে লাগাতার অভিযান চলছে।’’ এ দিন পাঁচটি দেহেরই ময়না-তদন্ত হয়েছে বর্ধমান পুলিশ মর্গে। এসেছিলেন বর্ধমান জেলা পরিষদের মেন্টর উজ্জ্বল প্রামাণিক, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু।

গলসি থানার পুলিশ জানায়, দুই বিজেপি নেতা-সহ মোট ২৯ জনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, দল বেঁধে হামলার চেষ্টা-সহ নানা অভিযোগে দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন যে ট্রাকটি বাড়ির উপরে পাল্টি খায়, সেটির চালক হুগলির পাণ্ডুয়ার গোপালনগরের বাসিন্দা অভিজিৎ হাঁসদা। পুলিশ ট্রাকটি বাজেয়াপ্ত করেছে। ট্রাক চালক এবং ধৃত সঞ্জীব বাগদি, মহম্মদ মহসিন, মোহন সাঁতরাকে এ দিন আদালতে তোলা হলে চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, চালক অভিজিৎ ঘটনার সময়ে মত্ত ছিলেন। ডাক্তারি পরীক্ষায় তাঁর প্রমাণ মিলেছে। অভিজিতের কাছে লাইসেন্সও ছিল না। পুলিশের আরও দাবি, দেহগুলি উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে তাক করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়, শিকারপুর-গলসি রোড কেটে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, মাথায় হেলমেট থাকায় এক হোমগার্ড টাঙির আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement