বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। — ফাইল চিত্র।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ পাচারের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে দু’জন অ্যানাটমি বিভাগের কর্মী। অন্য এক জন হাসপাতালেরই অন্য বিভাগের কর্মী। দেহ পাচারের ঘটনায় সাত জনকে আটক করা হয়েছিল বুধবার। তাঁদের মধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, ঘটনার ‘মূল চক্রী’ পলাতক। ওই ব্যক্তিকে ধরতে পারলে দেহ পাচারের গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পলাতক ব্যক্তি এক সময়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের কর্মী ছিলেন। তবে তাঁর নাম বা পরিচয় জেলা পুলিশ সুপার প্রকাশ করেননি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগের কর্মী অবিনাশ মল্লিক এবং নন্দলাল ডোমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অবিনাশের বাড়ি দার্জিলিং জেলার মাটিগড়া থানার কালামজোটে। নন্দলাল বর্ধমানের সাধনপুরের বাসিন্দা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) বিভাগের কর্মী গৌতম ডোম। তাঁর বাড়ি বর্ধমানের ষাঁড়খানাগলিতে। বাকি দু’জন সম্পর্কে বাবা-ছেলে। বাবা শম্ভু মিত্র অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং ছেলে সুমন মিত্র শববাহী গাড়ির চালক। বাড়ি বর্ধমান শহরের বাবুরবাগ এলাকায়।
বুধবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে মৃতদেহ পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরে পড়েন শববাহী গাড়ির চালক-সহ বেশ কয়েক জন। বুধবার সকালে মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের মৃতদেহ রাখার ঘর থেকে তিনটি দেহ পাচার করা হচ্ছিল শববাহী গাড়িতে। নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতায় তিনটি মৃতদেহ-সহ গাড়িটিকে আটক করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছয় বর্ধমান থানার পুলিশ। ঘটনায় জড়িত রয়েছেন সন্দেহে মেডিক্যাল কলেজের চার কর্মী-সহ মৃতদেহ বহনকারী সাত জনকে আটক করা হয়। মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহ পাচার করা হচ্ছে, এমন খবর জানতে পেরে তৎপর হন কর্মীরা। ধৃতেরা আন্তঃরাজ্য পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, দেহগুলি ভিন্রাজ্যে পাচারের পরিকল্পনা ছিল। সম্ভবত, উত্তরাখণ্ডে দেহগুলি পাচারের চেষ্টা ছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক এই বিষয়ে বলেন, ‘‘মৃতদেহ চুরি হচ্ছিল। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।’’