বার্নপুরের ‘ডেলি মার্কেটে’। নিজস্ব চিত্র
আগুনে ছাই হয়ে গেল বাজারের একটি দোকান। সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও দু’টি দোকান। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর ইস্কোর ‘ডেলি মার্কেট’-এ। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ‘শর্টসার্কিট’ থেকে আগুন লেগেছে বলে অনুমান দমকলকর্মীদের।
অগ্নিকাণ্ডের পরে, ক্ষতিপূরণ ও বাজার রক্ষণাবেক্ষণের দাবিতে সরব হন ব্যবসায়ীরা। বুধবার সকাল থেকে বাজার বন্ধ করে, ইস্কোর শহর প্রশাসনিক কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কী করে আগুন লাগল, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ। তার পরেই বিক্ষোভ ওঠে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান থেকে গলগল করে ধোঁয়া বার হতে দেখেন বাজারের নিরাপত্তারক্ষীরা। রাত হয়ে যাওয়ায় এলাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। ঘটনাস্থলের ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে হিরাপুর থানা। নিরাপত্তারক্ষীরা সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেন। ততক্ষণে অবশ্য ওই দোকানটি পুরোপুরি আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে। থানা থেকে ইস্কো ও রাজ্য দমকলে খবর পাঠানো হয়।
নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, অল্প সময়ের মধ্যে ইস্কো কারখানা ও আসানসোল থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিভে যায়। কিন্তু দোকানটি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। তবে দমকলের ইঞ্জিন দু’টি সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় রক্ষা পেয়েছে আশপাশের বহু দোকান।
ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া দোকানের মালিক অশোক গোয়েল জানান, মঙ্গলবার হোলির উৎসব বলে বাজারে খুব একটা ভিড় ছিল না। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘রাত ১১টা নাগাদ ফোনে খবর পাই, দোকানে আগুন লেগেছে। বাজারে পৌঁছে দেখি সব শেষ হয়ে গিয়েছে।’’
এ দিকে, বুধবার সকাল থেকেই বাজারের প্রায় তিনশো ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, দোকানের পাশেই একটি বিদ্যুতের খুঁটি আছে। সেখান থেকে খোলা অবস্থায় বিদ্যুতের তার ঝুলছে। ঝুলে রয়েছে একটি ‘সুইচগিয়ার’ বাক্স। সেখানে ‘শর্টসার্কিট’ হওয়ায় এই আগুন লেগেছে বলে দাবি তাঁদের। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য কাজল পালের অভিযোগ, ‘‘যেখানে সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে খোলা তার ঝুলছে। আগুন নেভানোর আপৎকালীন ব্যবস্থাও নেই। রাস্তা, নর্দমা নিয়মিত সাফাই হয় না।’’ বারবার বলা হলেও ইস্কো কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, দোকানের জন্য প্রতি বর্গফুট হিসেবে চার টাকা করে ভাড়া দেওয়া হয়। বিদ্যুতের টাকা আলাদা দেওয়া হয়। তবুও তাঁদের নানা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
তবে কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন ইস্কোর শহর বিভাগের জিএম ভাস্কর কুমার। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। ব্যবসায়ীদের বাকি অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’