ফাইল চিত্র।
শহরের সিটি সেন্টারের শপিং মল, হোটেলগুলির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে বুধবারই প্রশ্ন তুলেছিল দুর্গাপুর পুরসভার পরিদর্শক দল। তার ৪৮ ঘণ্টা পার হতে না হতেই শুক্রবার সকালে জাতীয় সড়কের ধারে একটি শপিং মল সংলগ্ন একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লাগল। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়িটির একতলায় একটি বহুজাতিক সংস্থার খাবারের দোকান রয়েছে। বেসমেন্টে সার্ভার রুমে খাবারের প্যাকেট-সহ অন্য পরিত্যক্ত কাগজপত্র রাখা ছিল। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিটের জেরে সেখানেই আগুন ধরে। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ প্রথম বেসমেন্ট থেকেই বাইরে ধোঁয়া বার হতে দেখা যায়। খবর যায় দমকলে। কাছেই দমকলের কার্যালয়। দ্রুত একটি ইঞ্জিন আসে। কিন্তু বেসমেন্ট ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়ায় কী ভাবে ভিতরে ঢোকা যাবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন দমকলকর্মীরা। বাইরে থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র সরিয়ে সেই ফাঁক দিয়ে টর্চের আলো জ্বেলে শেষমেশ ভিতরে পাইপ দিয়ে জল দিতে শুরু করেন তাঁরা। দমকলের আরও একটি ইঞ্জিন আসে। রান্নার জন্য বেশ কয়েকটি বড় বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল ভবনের বাইরের অংশে। সেগুলি দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়। ধোঁয়া কিছুটা কমলে ধীরে ধীরে ভিতরে ঢুকতে শুরু করেন দমকল কর্মীরা।
ওই ভবনের তিন তলায় থাকা একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থার কর্মী গৌতম রুইদাস সকাল ৬টা নাগাদ কাজে আসেন। আগুন লাগলে তিনি সেখানেই আটকে পড়েন। সংস্থার তরফে কল্লোল মুন্সী জানান, ফোনে গৌতমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন তাঁরা। শেষমেশ ঘণ্টা তিনেক বাদে দমকল কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। আতঙ্কে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
আগুন ধরার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্থানীয় ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম সার্ভার রুম থেকে আগুন ধরেছে। বহুতলগুলির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে অভিযান শুরু করেছি। সোমবার ফের অভিযান হবে। বহু ভবনই কার্যত জতুগৃহ হয়ে আছে।’’ ঘটনাস্থলে এসেছিলেন দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি, মেয়র পারিষদ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়েরাও।
দমকলের দুর্গাপুর স্টেশন অফিসার সমীররঞ্জন জানা বলেন, ‘‘অল্প জায়গায় আগুন লেগেছিল। ভবনের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা কাজ করেছে। তার উপরে এখানে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা ছিল।’’ সংশ্লিষ্ট সংস্থা জানিয়েছে, আগুনের জেরে কী ক্ষয়ক্ষতি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।