পছন্দের দলের ব্যানার টাঙাতে ব্যস্ত। নিজস্ব চিত্র
কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টারের প্রায় সব খেলাই শেষ। খেতাব দখলের জন্য আর্জিন্টিনার লিওনেল মেসি, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ব্রাজিলের নেইমারদের জানকবুল লড়াই দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা। সময় যত গড়াচ্ছে, শীতের রাতে ফুটবলের উত্তাপ তত বাড়ছে কালনা শহর ও সংলগ্ন গ্রামাঞ্চলে।
কালনা শহরে কোথাও টাঙানো হয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা। কোথাও ঝুলছে মেসি-নেইমার-রোনাল্ডোদের ছবি। অনেক জায়গায় আবার প্রোজেক্টরের মাধ্যমে বড়পর্দায় খেলা দেখানো হচ্ছে। বাঘনাপাড়া স্টেশনের কাছে এক ক্লাবের সামনে ঝোলানো রয়েছে বড় দু’টি ব্যানার। একটি ঝুলিয়েছেন ব্রাজিল সমর্থকেরা। সেখানে রয়েছে নেইমার-সহ গোটা দলের ছবি। অন্যটিতে রয়েছে মেসি ও তাঁর দলীয় সতীর্থদের ছবি। মেসিকে সেখানে ‘ফুটবলের ঈশ্বর’ আখ্যা দিয়েছেন আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা। ফুটবল যুদ্ধে আড়াআড়ি বিভক্ত ক্লাবের ৩০০ সদস্য। ক্লাবের উদ্যোগে ২৫ হাজার টাকা খরচে প্রোজেক্টর আনা হয়েছে। অনেক রাত পর্যন্ত বড় পর্দায় খেলা দেখছেন বহু মানুষ।
মঙ্গলবার ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে শিবু বাছার বলেন, ‘‘রাত জেগে খেলা দেখছি। আর্জেন্টিনার খেলা থাকলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, যাতে মেসির পা থেকে গোল আসে। আর্জেন্টিনা যেন জেতে।’’ ওই ক্লাবের রিপন বণিক কলকাতার বিভিন্ন দলে খেলেছেন। তিনি আবার ব্রাজিলের সমর্থক। রিপন বলেন, ‘‘ব্রাজিলের খেলা শেষ না হলে উঠি না। আমার বিশ্বাস, ব্রাজিলই বিশ্বকাপ জিতবে।’’
আদালতমুখী রাস্তায় দীপালী সঙ্ঘের মাঠ-সহ শহরের অলিগলিতে ঝুলছে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের পতাকা। সকালে চায়ের দোকান ও বাজারেও চর্চা সেই ফুটবল ঘিরে। অস্ট্রেলিয়াকে হেলায় উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। তবু প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে মেসির দলের হার এখনও ভুলতে পারছেন না আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা। এখনও এ নিয়ে তাঁদের খোঁচা দেন ব্রাজিল সমর্থকেরা। ক্যামেরুনের কাছে নেইমারের দলের হারের কথা তুলে তাঁদের পাল্টা দেন মেসি-ভক্তেরা।
লড়াই চলছে সামাজিক মাধ্যমেও। ফেসবুকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকে একে অপরকে বিঁধছেন রসিক মন্তব্যে। অনেকে তাঁদের প্রিয় ফুটবলারের খেলার ভিডিয়ো পোস্ট করছেন সামাজিক মাধ্যমে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সেনেগালের মতো দলগুলি ফুটবলে কতটা উন্নতি করেছে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে আড্ডায়। শহরের বাসিন্দা গোপাল মণ্ডল বলেন, ‘‘যে-ই জিতুক না কেন, ভাল ফুটবল এবং ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের প্রশংসা করেন সকলেই।’’ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক নুরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘‘ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা ক্রমশ বাড়ছে কালনায়। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক।’’