প্রতীকী ছবি।
লকডাউন চলাকালীন উত্তরপ্রদেশে গয়নার দোকানে ঝাঁপ ফেলে মেমারির গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছিলেন ইসলাম শেখ (৪৫)। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে দেখে শুক্রবার সপরিবারে গাড়ি ভাড়া করে ফের রওনা হন। শনিবার ভোরে বিহারের অওরঙ্গবাদে জাতীয় সড়কে ডাম্পারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সেই গাড়ির। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলেই ইসলাম প্রাণ হারান। কিছুক্ষণ পরে তাঁর বছর পনেরোর ছেলে ইমানুল শেখেরও মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সেখানকার একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ইসলামের স্ত্রী রেজিনা বিবি, ছোট মেয়ে তসমিনা খাতুন ও শ্যালক আলি শেখকে। এখন তাঁরা বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ইসলাম শেখের ভাই দিলু শেখ জানান, উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির কাছে মহারানিপুরে তাঁর দাদার সোনার গয়নার দোকান রয়েছে। করোনা আবহে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হলে দাদা দোকান বন্ধ করে মেমারির কাঁঠালগাছি গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। তাঁর দাবি, লকডাউন উঠলেও ঝাঁসি এলাকায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়মনীতি মেনে খুলতে হচ্ছিল। ক্রেতাও বিশেষ আসছিল না বলে দাদা দোকান খোলার উৎসাহ দেখাননি। সম্প্রতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, এমন খবর জানার পরে দোকান খোলার কথা ভাবেন। পরিজনেরা জানান, অন্য সময়ে ট্রেনে করেই যাতায়াত করতেন ইসলাম। ট্রেন না চলায় উত্তরপ্রদেশেরই একটি যাত্রিবাহী গাড়িতে করে সপরিবারে ঝাঁসি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে ও শ্যালককে নিয়ে শুক্রবার ঝাঁসির উদ্দেশে রওনা দেন। শনিবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সকালে কাঁঠালগাছি গ্রামে খবর আসে।
পুলিশের অনুমান, ভোরে চালকের ঝিমুনি এসে যাওয়ার জন্যই ডাম্পারের পিছনে গিয়ে গাড়িটি ধাক্কা মারে। জাতীয় সড়কের উপরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরিবারের দু’জন মারা যান। চালক-সহ চার জন গুরুতর জখম হয়েছেন। চালককে বিহারের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কাঁঠালগাছি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মাবুদ বলেন, ‘‘এই ঘটনার খবর আসার পরেই পুরো গ্রাম শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। এর আগেও দু’তিন বার উত্তরপ্রদেশ থেকে গাড়ি এসে ইসলাম ও তাঁর পরিবারকে ঝাঁসি নিয়ে গিয়েছে। সেই ভরসায় এ বারও সেখানকার গাড়ি ভাড়া করেছিলেন ইসলাম।’’ রবিবার সকালে কাঁঠালগাছি গ্রামে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।